স্বাধীন সাংবাদিকতা হুমকির মুখে

Posted: 17 জানুয়ারী, 2021

একতা প্রতিবেদক : আন্তর্জাতিক সততা পুরস্কার ও একুশে পদকপ্রাপ্ত অকুতোভয় সাংবাদিক মানিক সাহা হত?্যার পুনঃতদন্ত ও ন?্যায় বিচার দাবি করেছেন সাংবাদিক নেতা ও রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দসহ বিভিন্ন শ্রেণি ও পেশার প্রতিনিধিরা। গত ১৫ জানুয়ারি সকালে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে অনুষ্ঠিত এক স্মৃতিচারণ সভায় তারা বলেন, এই পৈশাচিক হত?্যাকাণ্ডের বিচার না হওয়ায় এবং হত?্যার পরিকল্পনাকারী, পৃষ্ঠপোষক, অর্থদাতাসহ ভাড়াটিয়া খুনিরা ধরাছোঁয়ার বাইরে থাকায় স্বাধীন সাংবাদিকতা হুমকির মুখে রয়েছে। মানিক সাহা হত্যাকাণ্ডের ১৭তম বার্ষিকীতে সাংবাদিক মানিক সাহার সুহৃদবৃন্দ আয়োজিত স্মৃতিচারণ সভায় সভাপতিত্ব করেন সিনিয়র সাংবাদিক আশীষ কুমার দে। সাংবাদিক নিখিল ভদ্রের সঞ্চালনায় সভায় বক্তৃতা করেন বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন (বিএফইউজে)’র সাবেক সভাপতি মনজুরুল আহসান বুলবুল ও সাবেক যুগ্ম মহাসচিব জাকারিয়া কাজল, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি)’র কেন্দ্রীয় সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স, জাতীয় প্রেসক্লাবের যুগ্ম সম্পাদক মো. আশরাফ আলী, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের (ডিইউজে) সাবেক সভাপতি আবু জাফর সুর্য ও বর্তমান সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদ আলম খান তপু, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি মুরসালিন নোমানী, সাবেক সাধারণ সম্পাদক রাজু আহমেদ ও সাবেক সহ-সভাপতি আজমল হক হেলাল, বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা)’র যুগ্ম সম্পাদক মিহির বিশ্বাস, উদীচী’র কেন্দ্রীয় যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অমিত রঞ্জন দে, শিক্ষক নেতা অধ্যক্ষ মো. আকমল হোসেন, জাতীয় প্রেস ক্লাবের ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্য রহমান মুস্তাফিজ, বিএফইউজে’র নির্বাহী সদস্য শেখ মামুনুর রশীদ ও সাবেক নির্বাহী সদস্য রফিকুল ইসলাম সবুজ, ডিইউজে নির্বাহী কমিটির সদস্য সাকিলা পারভীন, সাংবাদিক মানিক লাল ঘোষ, সংস্কৃতি কর্মী হাসান তারেক, ইঞ্জিনিয়ার তুহীন পারভেজ। সাংবাদিক মানিক সাহার জীবন ও কর্ম সম্পর্কে নানান স্মৃতি তুলে ধরে সাংবাদিক নেতা মনজুরুল আহসান বুলবুল বলেন, অনুসন্ধানী সাংবাদিকতায় দৃষ্টান্ত রেখেছেন মানিক সাহা। অনুসন্ধানী সাংবাদিকতাই তার হত্যার রহস্য উদ্ঘাটন করতে পারে। তাই অনুসন্ধানী সাংবাদিকতাকে বিশেষ গুরুত্ব দিতে হবে। সরকারকেও সকল সাংবাদিক হত্যাকাণ্ডের বিচারের প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নে আন্তরিক হতে হবে। রুহিন হোসেন প্রিন্স বলেন, মানিক সাহা ছিলেন বুর্জোয়া শাসক শ্রেণি ও মৌলবাদী গোষ্ঠীর অন্যায়, অত্যাচার ও নির্যাতনের বিরুদ্ধে সাহসী ও প্রতিবাদী কণ্ঠ। এ কারণেই তাঁকে হত্যা করা হয়েছে। সরকার ও রাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর ব্যর্থতার কারণে এই হত্যাকাণ্ডের রহস্য এই দীর্ঘ সময়েও উন্মোচন হয়নি। তিনি সকল সাংবাদিক হত্যাকাণ্ডের বিচারের দাবিতে ঐক্যবদ্ধ ও সোচ্চার হওয়ার আহ্বান জানান। মানিক সাহা ও সাগর-রুনিসহ সকল সাংবাদিক হত্যার সুষ্ঠু বিচার দাবি করে সভায় বক্তারা বলেন, সরকার যদি যথাসময়ে এসব হত্যাকাণ্ডের বিচারের কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করতো তাহলে সাংবাদিকদের রাজপথে নামতে হতো না। সাংবাদিকসহ সাধারণ মানুষের সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ এবং আইনের শাসন, ন্যায় বিচার ও মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার স্বার্থে চাঞ্চল্যকর এই হত্যাকাণ্ডের রহস্য উন্মোচন হওয়া একান্ত প্রয়োজন। পুনঃতদন্তের মাধ্যমে সাংবাদিক মানিক সাহার প্রকৃত খুনী, খুনীদের অর্থদাতা ও পৃষ্ঠপোষকদের চিহ্নিত ও গ্রেপ্তার করে বিচারের মুখোমুখি দাঁড় করানোর দাবি জানান তারা। উল্লেখ্য, ২০০৪ সালের ১৫ জানুয়ারি দুপুরে খুলনা প্রেসক্লাবের অদূরে ছোটো মির্জাপুর এলাকায় দুর্বৃত্তদের বোমা হামলায় মানিক সাহা নিহত হন। মৃত্যুর আগমুহূর্ত পর্যন্ত তিনি দৈনিক সংবাদ ও নিউএজ পত্রিকার খুলনাস্থ সিনিয়র রিপোর্টার, রেডিও বিবিসি’র (বাংলা সার্ভিস) খণ্ডকালীন সংবাদদাতা এবং মানবাধিকার সংগঠন এ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল-খুলনা চ্যাপ্টারের সভাপতি ছিলেন।