ঘরে ঘরে চাকরির কথা বলে জাতির সঙ্গে ‘মহা প্রতারণা হয়েছে’

Posted: 20 সেপ্টেম্বর, 2020

একতা প্রতিবেদক : আওয়ামী লীগ তাদের ২০০৮ সালের ‘দিন বদলের সনদে’ প্রতি পরিবারের অন্তত একজনকে চাকরি দেয়ার প্রতিশ্রæতি দিয়েছিল। ২০১০ সালের মার্চ মাসে কুড়িগ্রামে ন্যাশনাল সার্ভিস কর্মসূচির উদ্বোধনও করা হয়েছিল। উদ্বোধন করেছিলেন স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী। পরবর্তীতে দেশের ৩৭ জেলায় ২ লাখ ৩৮ হাজার নারী-পুরুষকে এই কর্মসূচির আওতায় নিয়োগ দেয়া হয়। প্রশিক্ষণ শেষে বিভিন্ন খাতে তারা যোগদান করেন। কিন্তু ২ বছর পরই তাদের প্রকল্প শেষ হয়ে; এবং তখন থেকেই তারা বেকার। চাকরি স্থায়ী করার দাবিতে ওই কর্মীরা আন্দোলন করে যাচ্ছেন। গত ১৪ সেপ্টেম্বর জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে একটি সংবাদ সম্মেলনও করেছেন তারা। ওই সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত জাতীয় ও শ্রেণি-পেশার নেতৃবৃন্দ ঘরে ঘরে চাকরির অঙ্গীকার বাস্তবায়নের নামে আওয়ামী লীগ জাতির সঙ্গে মহা প্রতারণা করেছে বলে মন্তব্য করেছেন। সংবাদ সম্মেলনে সংহতি জানিয়ে সংক্ষিপ্ত বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) প্রেসিডিয়াম সদস্য আবদুল্লাহ ক্বাফী রতন, সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্টের সভাপতি রাজেকুজ্জামান রতন, গার্মেন্ট শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের সাধারণ সম্পাদক জলি তালুকদার, বাংলাদেশ যুব ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক খান আসাদুজ্জামান মাসুম, বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক অনিক রায়। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন বাংলাদেশের ন্যাশনাল সার্ভিস পরিষদের সভাপতি আতিক হাসান রাজা। সিপিবি নেতা ক্বাফী রতন বলেন, প্রধানমন্ত্রীর উদ্বোধন করা ‘ন্যাশনাল সার্ভিস কর্মসূচি’ জাতির সঙ্গে মহা প্রতারণা ভিন্ন আর কিছু নয়। ঘরে ঘরে চাকরি দেয়ার কথা বলে ঘটা করে প্রকল্প উদ্বোধন যে আসলে লোক দেখানো ও প্রহসনমূলক ছিল, প্রকল্প শেষে বেকার হয়ে পড়া ২ লাখের বেশি কর্মীই তার জ্বলজ্যান্ত প্রমাণ। তিনি আরও বলেন, বর্তমান সরকার ২০০৮ সালে দেশের তরুণ প্রজন্মকে কর্মসংস্থানের আশা দেখিয়ে ক্ষমতায় এসে বেকার যুবকদের প্রতি সীমাহীন অবহেলার নজির স্থাপন করেছে। যারা জাতির ভবিষ্যৎ প্রজন্মের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছে তারা এর উপযুক্ত জবাব পাবে। শ্রমিকনেতা রাজেকুজ্জামান রতন বলেন, বেকার হয়ে পড়া ন্যাশনাল সার্ভিস কর্মীরা শুধু অর্থনৈতিকভাবেই ক্ষতিগ্রস্থ হয়নি তারা সামাজিকভাবেও নিগৃহীত হয়েছে। ২ বছরের প্রকল্প কোনোভাবেই সরকার প্রদত্ত কর্মসংস্থান হতে পারে না। তিনি সরকারকে হুঁশিয়ার করে বলেন, প্রতারিত যুবকদের ক্রোধ বড় ভয়ঙ্কর হয়। আজ যারা চাকরির জন্য হাত পেতেছে কাল সে হাত মুষ্ঠিবদ্ধ হবে। তিনি আরও বলেন, দেশে যেখানে একজন সরকার দলীয় ছাত্রনেতা ২ হাজার কোটি টাকা পাচারের দায়ে অভিযুক্ত হন সেখানে বছরে মাত্র সাড়ে চারশত কোটি টাকা হলেই ন্যাশনাল সার্ভিস কর্মীদের চাকুরি স্থায়ী করা সম্ভব। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে ন্যাশনাল সার্ভিস প্রকল্প কর্মীদের চাকরি স্থায়ীকরণ এবং মেয়াদ শেষ হওয়া সকল কর্মীর পুনর্বহালসহ অন্যান্য দাবিতে অক্টোবর মাসব্যাপী জেলা ও বিভাগীয় কনভেনশন, ৪ নভেম্বর ঢাকার শাহবাগে সংহতি সমাবেশ; ১৬ নভেম্বর জেলায় জেলায় বিক্ষোভ এবং ২৮ নভেম্বর ঢাকায় মহাসমাবেশ করার ঘোষণা দেওয়া হয়।