ভয়াবহ বিপর্যয়ের ঝুঁকিতে দক্ষিণ এশিয়া বন্যায় বাড়ছে মৃত্যু সংখ্যা

Posted: 26 জুলাই, 2020

একতা বিদেশ ডেস্ক ঃ করোনাভাইরাস মহামারি এবং এর ফলে সৃষ্ট আর্থিক সংকটের মধ্যেই মৌসুমি ভারী বর্ষণ এবং নদীর পানি বিপদসীমা অতিক্রম করায় ভয়াবহ বন্যার ঝুঁকিতে রয়েছে দক্ষিণ এশিয়া। বাংলাদেশ, ভারত এবং নেপালে ইতোমধ্যে ভয়াবহ বন্যার সৃষ্টি হয়েছে। প্রায় ৯৬ লাখের বেশি মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। ভারী বৃষ্টিপাতের ফলে চীনের তিব্বত, ভারত ও বাংলাদেশের ওপর দিয়ে বহমান ব্রহ্মপুত্র নদের পানি গত মাসে বেড়ে যায়। এতে নদের পানিতে প্লাবিত হয় নেপাল এবং ভারতের আসাম রাজ্যের নিম্নাঞ্চল। সেখানে ভূমিধস বেড়ে যায়। এবং ভারত ও নেপালের উচু ভূমি থেকে বন্যার পানি নেমে আসে বাংলাদেশে। বন্যার উৎপত্তি স্থল চীনের মধ্য ও পূর্বাঞ্চলজুড়ে প্রবল বৃষ্টিপাতে কয়েক দশকের মধ্যে ভয়াবহ বন্যা দেখা দিয়েছে। যে শহরে প্রথম করোনার প্রাদুর্ভাব ঘটে, সেই হুবেই প্রদেশে উহানসহ আরও কয়েকটি স্থানে ২৪ জুলাই ‘সর্বোচ্চ সতর্কতা’ জারি করেছে কর্তৃপক্ষ। ভারতের আসাম ও নেপালে ভয়াবহ বন্যায় মারা গেছেন কমপক্ষে ২০০ মানুষ। বাংলাদেশ, ভারত এবং নেপালে মোট মৃতের সংখা ২২১ জন। ভারতের উত্তর–পূর্বাঞ্চলে বন্যা ও ভূমিধসে নতুন করে প্রাণ হারিয়েছে ১৬ জন। মুম্বাইয়ে ভবনধসে আটজন মারা যায়। এ নিয়ে দেশটিতে ভূমিধস ও বন্যায় মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ১০১। গত এক মাসে নেপালে ১১৭ জন ও বাংলাদেশে ৩ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। এছাড়া বাস্তুচ্যুত হয়েছেন ১০ লাখ মানুষ। ইন্টারন্যাশনাল ফেডারেশন অব রেড ক্রস অ্যান্ড রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটিজের (আইএফআরসি) এক বিবৃতিতে জানিয়েছে এই বন্যার ফলে ভয়াবহ বিপর্যয়ের ঝুঁকিতে রয়েছে দক্ষিণ এশিয়া। আইএফআরসি মহাসচিব জাগান চাপাগাইন বলেন, বাংলাদেশ, ভারত ও নেপালজুড়ে লাখো মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছেন, বন্যায় তাদের ঘরবাড়ি ও ফসল ধ্বংস হয়েছে। “প্রতিবছর মৌসুমী বন্যা হলেও এবারের প্রেক্ষাপট ভিন্ন; বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে পড়া ভয়াবহ প্রাণঘাতী কোভিড-১৯ মহামারির মধ্যে মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা হিসেবে হাজির হয়েছে। চাপাগাইন বলেন, বাংলাদেশ, ভারত ও নেপালের মানুষ বন্যা, করোনাভাইরাস ও তার সহগামী জীবনযাপন ও চাকরি হারানোর আর্থ-সামাজিক সংকটের ত্রিমুখী চাপে পিষ্ট। কৃষিজমি প্লাবিত হয়ে ফসলের ক্ষতি কোভিড-১৯ মহামারিতে ইতোমধ্যেই মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া লাখ লাখ মানুষকে দারিদ্র্যের মধ্যে ঠেলে দেবে।” বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, আইএফআরসি বন্যার্তদের জন্য ত্রাণ কার্যক্রম ও উদ্ধার তৎপরতায় গত মাসে ২ লাখ ৩০ হাজারে বেশি সুইস ফ্রাঁসহ বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্টকে মোট ৮ লাখ সুইস ফ্রাঁ (৮ লাখ ৫০ হাজার ডলার) দিয়েছে।