‘অতি বিপন্ন’ ১৭% হাঙ্গর ও রে ফিশ: জরিপ

Facebook Twitter Google Digg Reddit LinkedIn StumbleUpon Email

একতা প্রকৃতি ডেস্ক পৃথিবী জুড়ে শীর্ষ ২০ দেশে প্রতি বছর তিন লাখ ৩৩ হাজার ৯৫২ মেট্রিক টন হাঙ্গর ও রে ফিশ (হাঙ্গর গোত্রীয়) ধরা পড়ছে বলে উঠে এসেছে প্রাণী ও উদ্ভিদ বিষয়ক আন্তর্জাতিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান ‘ট্রাফিক’র একটি জরিপে। ২০০৭ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত বিশ্বের নানা দেশে সমুদ্রে জরিপ চালিয়ে ক্যামব্রিজভিত্তিক এই গবেষণা প্রতিষ্ঠানটি যে চিত্র তুলে এনেছে তাতে দেখা যাচ্ছে, এই সময়ের মধ্যে হাঙ্গর ও রে ফিশের ১৭ শতাংশ ‘অতি বিপন্ন’ তালিকায় উঠেছে। বিষয়টি প্রাণী বিষয়ক আরেক গবেষণা প্রতিষ্ঠান আইইউসিএনের রেড লিস্টেও এসেছে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে রে ফিশের চাহিদাও রয়েছে বেশ: ট্রাফিক- এর জরিপ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিশ্বে যেসব দেশে সবচেয়ে বেশি হাঙ্গর ও রে ফিশ ধরা হয় তার মধ্যে শীর্ষে রয়েছে ইন্দোনেশিয়া। দেশটিতে বছরে এক লাখ ১০ হাজার ৭৩৭ টন হাঙ্গর ও রে ফিশ ধরা পড়ছে। দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে স্পেন, সেখানে প্রতি বছর ধরা পড়ছে ৭৮ হাজার ৪৪৩ টন। তৃতীয় স্থানে থাকা দেশটির নাম কিছুটা অবাক করবে! বাংলাদেশের প্রতিবেশী দেশ ভারত! সেখানে প্রতি বছর ৬৭ হাজার ৩৯১ টন হাঙ্গর ও রে ফিশ ধরা পড়ছে। এরপরই রয়েছে মেক্সিকো ও যুক্তরাষ্ট্র। হাঙ্গরশিকারি দেশগুলোর মধ্যে রয়েছে পাকিস্তান, মালয়েশিয়া, ব্রাজিল, নিউজিল্যান্ড, জাপান, ফ্রান্স, আর্জেন্টিনা ও পর্তুগালের নামও। পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোতে হাঙ্গরের ডানার স্যুপ খুব জনপ্রিয়। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০০০-২০১৬ সময়ে প্রতিবছর বিশ্বজুড়ে প্রায় ১৬ হাজার ১৭৭ টন হাঙ্গরের ডানার বাণিজ্য হয়েছে, যার অর্থমূল্য ২৯ কোটি ৪০ লাখ ডলার। ‘হাঙ্গরডানার বাণিজ্যের’ ৯০ শতাংশই ওই সময়ে হয়েছে বলে দাবি করছে ট্রাফিক। ২০০০-২০১৬ সময়ে সবচেয়ে বেশি হাঙ্গরের ডানা আমদানি করেছে হংকং, যার পরিমাণ বছরে নয় হাজার ৬৯ টন। এছাড়া মালয়েশিয়া বছরে দুই হাজার ৫৫৬ টন, চীন এক হাজার ৮৬৮ টন ও সিঙ্গাপুর এক হাজার ৫৮৭ টন হাঙ্গরের ডানা আমদানি করেছে। ট্রাফিক প্রতিবেদনে বলা হয়, হাঙ্গরের মাংস আমদানিকারক দেশগুলোর শীর্ষে আছে ব্রাজিল, স্পেন, উরুগুয়ে ও ইতালি। দেশগুলোতে এই বাণিজ্যের ৫৭ শতাংশই হয়েছে গত এক দশকে। ২০০২ সালে প্রকাশিত ‘কনভেনশন অন ইন্টারন্যাশনাল ট্রেড ইন ইনডেঞ্জারড স্পেসিসেস অব ওয়াইল্ড ফনা অ্যান্ড ফ্লোরা-অ্যাপেনডিক্স-২’ এর প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল, ১৪টি প্রজাতির হাঙ্গর ও ২৭টি প্রজাতির রে ফিশ সুরক্ষিত রয়েছে। কিন্তু এখন বলা হচ্ছে, সাগরের এই প্রাণীর ৪৭ প্রজাতির ব্যাপারে কোনো তথ্য পাওয়া যাচ্ছে না। বিস্তৃত বিচরণের কারণে হাঙ্গর ও রে ফিশ কি পরিমাণে কোথায় ধরা পড়ছে, সেই তথ্যও মিলছে না। প্রতিবেদনে সহ-রচয়িতা নিকোলা ওকস বলেন, ‘বিস্তৃত বিচরণের সময় হাঙ্গর ও রে ফিশ যখন ধরা পড়ছে, তখন তাদের প্রজাতি আলাদা না করায় পাওয়া যাচ্ছে না সঠিক তথ্য। জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থাতেও (এফএও) হাঙ্গরের তথ্য সাধারণ গোত্রভুক্ত হিসেবে আসছে। ‘সঠিক তথ্য না পেলে আমরা হাঙ্গর বাণিজ্য স্থিতিশীল করার কাজ করতে পারছি না। হাঙ্গর ও রে সমুদ্রের জন্য অত্যন্ত জরুরি। তাছাড়া সমুদ্রে হাঙ্গর ও রে শনাক্ত করার যথেষ্ট প্রযুক্তিও আমাদের হাতে নাই।’

Print প্রিন্ট উপোযোগী ভার্সন



Login to comment..
New user? Register..