হাওরে বন্যার আশঙ্কায় আধা পাকা ধানই কাটছেন কৃষকরা
মৌলভীবাজার সংবাদদাতা :
অতিবৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলের কারণে বন্যায় ২০১৭ সালে বোরো ধান ঘরে তুলতে পারেননি মৌলভীবাজারের হাওড়াঞ্চলের কৃষকরা। এ বছরও আগাম বৃষ্টি শুরু হওয়ায় বন্যায় ফসলহানির আশঙ্কা করছেন তাদের অনেকে। এ আশঙ্কায় ফসলহানি থেকে বাঁচতে হাকালুকি হাওড় এলাকার চাষিরা আধা পাকা ধান কাটা শুরু করে দিয়েছেন।
কৃষি বিভাগ সূত্র জানায়, মৌলভীবাজারের কুলাউড়া, জুড়ী ও বড়লেখা এবং সিলেটের তিনটি উপজেলা নিয়ে বিস্তৃত হাকালুকি হাওড়। চলতি মৌসুমে কুলাউড়ায় ৬ হাজার ৮০০ হেক্টর, জুড়ীতে ৫ হাজার ৪৮০ ও বড়লেখায় ৪ হাজার ৪৪০ হেক্টর জমিতে বোরো ধান আবাদ হয়েছে। এসব জমির অধিকাংশই পড়েছে হাকালুকি হাওড়ে।
স্থানীয় সূত্র জানায়, হাওড়াঞ্চলে বছরে একবার ধান আবাদ হয়, বোরো মৌসুমে। এ কারণে বোরো ধানের ফলনের ওপর এ এলাকার কৃষকরা নির্ভরশীল। ধান বিক্রির আয় দিয়েই তাদের সংসার চলে। ২০১৭ সালে অতিবৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে হাওড় তলিয়ে প্রায় শতকোটি টাকার ফসল নষ্ট হয়। ওই সময় ক্ষতিগ্রস্ত হন প্রায় ২৬ হাজার কৃষক। সে ক্ষতির কথা মনে করেই এবার আগাম ধান কাটা শুরু করে দিয়েছেন হাকালুকির হাওড় এলাকার কৃষকরা।
সম্প্রতি সরেজমিন কুলাউড়া উপজেলার ভূকশিমইল এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, হাওড়জুড়ে বিস্তৃত ক্ষেতে আধা পাকা ধান। বেশির ভাগ জমির ধান পুরোপুরি পাকেনি। যেসব জমিতে ধান আগাম রোপণ করা হয়েছিল, সেসব জমির ধান একটু বেশি পরিপক্ব হয়েছে। তবে কৃষকরা জমি নির্বিশেষে আধা পাকা ধান কাটা শুরু করে দিয়েছেন।
আলীনগর গ্রামের কৃষক সেলিম মিয়া বলেন, বোরো ধান আমাদের হাওড়পাড়ের কৃষকদের জীবিকা নির্বাহের একমাত্র ভরসা। আমি ১৬ বিঘা জমিতে বোরো ধান চাষ করেছি। কয়েক দিন থেকে দফায় দফায় বৃষ্টি হচ্ছে। যদি বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হই, তবে পরিবারের লোকজন নিয়ে চরম বিপাকে পড়ব। তাই ধান কাটা শুরু করে দিয়েছি।
এ ব্যাপারে কুলাউড়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা জগলুল হায়দার বলেন, বোরো ধান পুরোপুরি পাকতে কমপক্ষে সপ্তাহখানেক লাগবে। তবে হাওড়ে বিচ্ছিন্নভাবে আগাম জাতের ধান কাটা শুরু হয়েছে। মূলত ফসল হারানোর ভয়ে কৃষকরা আধা পাকা ধান কাটতে শুরু করেছেন। চৈত্র-বৈশাখে এ রকম কিছু বৃষ্টি হয়। এতে শঙ্কার কিছু নেই।
এ বছর ফলন অনেক ভালো হয়েছে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে মৌলভীবাজারে বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৫৩ হাজার ১১৬ হেক্টর। এর বিপরীতে আবাদ হয়েছে ৫৩ হাজার ১৬২ হেক্টরে। এর মধ্যে মৌলভীবাজার সদর উপজেলায় ১০ হাজার ৩০৬ হেক্টর, শ্রীমঙ্গলে ৯ হাজার ৩৩০, কুলাউড়ায় ৬ হাজার ৮০০, জুড়ীতে ৫ হাজার ৪৮০, বড়লেখায় ৪ হাজার ৪৪০, রাজনগরে ১২ হাজার ৬৯৩ ও কমলগঞ্জে ৪ হাজার ১০৩ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদ হয়েছে। এসব জমির মধ্যে ৪৯ হাজার ৮৩৫ হেক্টর জমিতে উচ্চফলনশীল, ৩২১ হেক্টরে স্থানীয় জাত ও ২ হাজার ৪৬৬ হেক্টরে হাইব্রিড জাতের ধান চাষ হয়েছে।
মৌলভীবাজার কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. শাহজাহান বলেন, বৃষ্টিতে বোরো ধানের তেমন কোনো ক্ষতি হয়নি। এবার ভালো ফসল এসেছে। আশা করি, সব শঙ্কা কাটিয়ে কৃষকরা ঘরে ফসল তুলতে পারবেন।
শেষের পাতা
সাইকেল র্যা লি করে গ্রামে গ্রামে নববর্ষের শুভেচ্ছা শিক্ষার্থীদের
‘বর্ষবরণ মানে না শৃঙ্খল’
ঈদ সামগ্রী নিয়ে মেহনতি মানুষের পাশে সিপিবি
বিপ্লবীদের স্মৃতি সংরক্ষণে রাষ্ট্রের উদাসীনতা দুঃখজনক
ময়ূর নদের সংযোগ খাল (তালতলা খাল) খনন প্রকল্পের সমালোচনা
রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা কারণ; আওয়ামী লীগ-বিএনপির পাওয়ার গেমের রাজনীতি
কমরেড মোর্শেদ আলীর তৃতীয় মৃত্যুবার্ষিকীতে শ্রদ্ধা
উত্তরবঙ্গের ছয় জেলায় নেই আবহাওয়া অফিস
কমরেড স্বপন কুমার সেনগুপ্তের মৃত্যুতে শোক
পহেলা বৈশাখে সিপিবির মঙ্গল শোভাযাত্রা
৭ দিনের সংবাদ...
Login to comment..