মস্তিষ্কে নতুন কোষ তৈরি হয় বৃদ্ধ বয়সেও

Facebook Twitter Google Digg Reddit LinkedIn StumbleUpon Email

একতা স্বাস্থ্য ডেস্ক : এত দিন মনে করা হতো, জন্মের সময় মস্তিষ্কে যে পরিমাণ কোষ থাকে, সারা জীবন তাই-ই রয়ে যায়। তবে নতুন একটি গবেষণা বলছে, মানুষের মস্তিষ্কে প্রায় সারা জীবনই নতুন কোষ তৈরি হয়। একজন সুস্থ মানুষের কমপক্ষে ৯৭ বছর পর্যন্ত এই প্রক্রিয়া চলে বলে জানিয়েছেন গবেষকেরা। স্পেনের মাদ্রিদ বিশ্ববিদ্যালয়ের এই গবেষণা নিবন্ধ যুক্তরাজ্যের বিজ্ঞান সাময়িকী নেচার মেডিসিন-এ গত সোমবার প্রকাশিত হয়েছে। মানুষের মস্তিষ্কের কোষ নিউরন নিজেদের মধ্যে বৈদ্যুতিক সংকেত পাঠায়। এই প্রক্রিয়া শুরু হয় জন্মের সময় থেকেই। অন্যান্য স্তন্যপায়ী প্রাণীর ক্ষেত্রে গবেষণায় দেখা গেছে, জীবনের শেষ দিকে তাদের মস্তিষ্কে নতুন কোষের সৃষ্টি হয়েছে। কিন্তু মানুষের ক্ষেত্রে নিউরোজেনেসিস (নতুন নিউরনের উদ্ভবপ্রক্রিয়া) অব্যাহত থাকে কি না, তা নিয়ে বিতর্ক ছিল। নতুন গবেষণায় ৫৮ জন মৃত মানুষের মস্তিষ্ক নিয়ে কাজ করেন গবেষকেরা। যাঁদের বয়স ছিল ৪৩ থেকে ৯৭ বছরের মধ্যে। মূল মনোযোগ দেয়া হয় মস্তিষ্কের ‘হিপ্পোকাম্পোস’ অংশে, যা স্মৃতি এবং আবেগ নিয়ন্ত্রণে ভূমিকা রাখে। মূলত এই অংশেই আলঝেইমার রোগ আক্রমণ করে। জন্মের পর থেকে নিউরন মস্তিষ্কে পরিপূর্ণ রূপে থাকে না। বয়স বৃদ্ধি ও পরিপক্ক হওয়ার প্রক্রিয়ার সঙ্গে তা পূর্ণতা পায়। গবেষকেরা মস্তিষ্কে এই অপরিণত বা ‘নতুন’ নিউরনকে শনাক্ত করতে পেরেছেন। গবেষক ড. মারিয়া লরেন্স-মার্টিন বলেন, ‘আমার বিশ্বাস, মানুষ যতক্ষণ নতুন কিছু শিখছে, ততক্ষণ নতুনভাবে নিউরনের বৃদ্ধি ঘটছে এবং এটি আমাদের জীবনের প্রতি মুহূর্তেই ঘটে চলেছে।’ কিন্তু আলঝেইমার রোগীদের ক্ষেত্রে বিষয়টি ভিন্ন। আলঝেইমারের প্রাথমিক পর্যায়ে নতুন নিউরন বৃদ্ধির সংখ্যা প্রতি মিলিমিটারে ৩০ হাজার থেকে কমে দাঁড়ায় ২০ হাজারে। ড. লরেন্সের মতে, রোগটির একদম শুরুতে এই হ্রাসের পরিমাণ থাকে ৩০ শতাংশ। তিনি বলেন, নতুন কোষ তৈরি কমার কারণ কাজে লাগানো যাবে আলঝেইমার এবং বার্ধক্যজনিত রোগের চিকিৎসায়। আলঝেইমার রিসার্চ ইউকে গবেষণার প্রধান ড. রোসা সানচো বলেন, ‘যদি কখনো আমরা জীবনের শুরুর দিকে নিউরন হারাতে শুরু করি, সে ক্ষেত্রে এই গবেষণা দেখাচ্ছে যে পরবর্তী সময়ে নতুন কোষের সৃষ্টি হতে থাকবে, এমনকি ৯০ বছর পর্যন্ত।’

Print প্রিন্ট উপোযোগী ভার্সন



Login to comment..
New user? Register..