মহান অক্টোবর বিপ্লবের শতবর্ষ বার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে সঙ্গীত পরিবেশন করছেন উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী [ ছবি: রতন দাস ] একতা প্রতিবেদক :
মহান রুশ বিপ্লবের শততম বার্ষিকী উদযাপন করেছে বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী। গত ১৩ অক্টোবর শুক্রবার বিকেল সাড়ে চারটায় পুরান ঢাকার ঐতিহাসিক বাহাদুর শাহ পার্কে আয়োজিত হয় এ অনুষ্ঠান। অনুষ্ঠানের শুরুতে দু’টি দলীয় সঙ্গীত পরিবেশন করেন উদীচী কেন্দ্রীয় সংসদের শিল্পীরা। তারা পরিবেশন করেন- ‘জাগো জাগো সর্বহারা, অনশন বন্দী ক্রীতদাস’ এবং ‘এই পতাকা শ্রমিকের রক্ত পতাকা’ গান দু’টি। এপর উদীচী কেন্দ্রীয় সংসদের সভাপতি অধ্যাপক ড. সফিউদ্দিন আহমদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত হয় আলোচনা সভা। এ পর্বে আলোচনায় অংশ নেন সাংস্কৃতিক সংগঠক হায়দার আনোয়ার খান জুনো, অক্টোবর বিপ্লব উদযাপনে জাতীয় কমিটির যুগ্ম-আহ্বায়ক ও অধ্যাপক এমিরেটাস সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য মঞ্জুরুল আহসান খান এবং উদীচী ঢাকা মহানগর সংসদের সভাপতি কাজী মোহাম্মদ শীশ। আলোচনা পর্বটি সঞ্চালনা করেন উদীচী কেন্দ্রীয় সংসদের সহ-সাধারণ সম্পাদক অমিত রঞ্জন দে।
আলোচনা সভায় বক্তারা বলেন, একশ বছর আগে ১৯১৭ সালে মহামতি ভøাদিমির লেনিনের নেতৃত্বে সংঘটিত রাশিয়ার সমাজতান্ত্রিক বিপ্লব শোষণ ও যন্ত্রণার অন্ধকার থেকে সাধারণ মানুষকে মুক্তি দিয়েছিল। সেই বিপ্লবের অনুপ্রেরণাতেই পরবর্তীতে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে জেগে ওঠে শৃঙ্খলিত মানুষ। সব শোষণ-বঞ্চনার অবসান ঘটিয়ে উন্নত ও আধুনিক জীবনের যে স্বপ্ন দেখেছিলেন বিপ্লবের নেতৃত্বদানকারীরা, তা বাস্তবে রুপ নিয়েছিল সোভিয়েত রাশিয়ায়। শুধু শোষণ-নির্যাতন থেকে মুক্তিই নয়, সেই বিপ্লবের অভিঘাতে শিল্প-সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক অঙ্গনেও বিশ্বব্যাপী এক নতুন জাগরণ শুরু হয়েছিল, যা বিশ্ববাসীর সামনে মুক্তির বারতা নিয়ে উপস্থিত হয়। আমাদের ভূখণ্ডের মানুষের মুক্তিসংগ্রামেও রুশ বিপ্লবের প্রভাব নতুন মাত্রা যোগ করেছিল। এমনকি, আজও বিপ্লবের সেই অগ্নিস্ফুলিঙ্গ নিপীড়িত মানুষের সামনে সমাজ বিনির্মাণের লড়াইয়ে অবতীর্ণ হওয়ার নতুন অনুপ্রেরণা যোগায়।
এরপর শুরু হয় সাংস্কৃতিক পরিবেশনা পর্ব। এ পর্বে দলীয় ও একক সঙ্গীত পরিবেশন করেন উদীচী’র শিল্পী-কর্মীরা। তারা পরিবেশন করেন- ‘হাতুড়িতে পেটাই লোহা মাকুতে দেই টান’ ও ‘ভেদি অনশন মৃত্যু তুষার তুফান’ গান দু’টি। একক আবৃত্তি পরিবেশন করেন মিজানুর রহমান সুমন, জোবায়েদুর রহমানসহ উদীচী’র বাচিক শিল্পীরা। দলীয় আবৃত্তি পরিবেশন করেন উদীচী ঢাকা মহানগর সংসদের আবৃত্তি বিভাগ। আর ‘হেই সামালো ধান হো কাস্তেতে দাও শান হো’ গানটির সঙ্গে দলীয় নৃত্য পরিবেশন করেন উদীচী ঢাকা মহানগর সংসদের শিল্পীরা। দলীয় পরিবেশনা নিয়ে মঞ্চে আসে তেজগাঁও ও মিরপুর শাখার শিল্পীরা। এছাড়াও, উদীচী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সংসদের শিল্পীরা পরিবেশন করেন পথনাটক ‘অধিকারনামা’।