সিপিবি’র বিবৃতি

সমাধানে বিশ্বজনমত গড়ার আহ্বান

Facebook Twitter Google Digg Reddit LinkedIn StumbleUpon Email
একতা প্রতিবেদক : বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি)-র সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম ও সাধারণ সম্পাদক মো. শাহ আলম এক বিবৃতিতে মায়ানমারের সরকারের মদদপুষ্ট হয়ে সেদেশের সেনাবাহিনী রোহিঙ্গাদের ওপর যে বর্বরোচিত হামলা, নির্যাতন, বাড়ি-ঘরে অগ্নিসংযোগ ও গণহত্যা চালাচ্ছে, তার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন। বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ বলেন, অমানবিক হামলায় লাখ লাখ রোহিঙ্গার জীবনে নেমে এসেছে চরম মানবিক বিপর্যয়। রোহিঙ্গা সমস্যা মায়ানমারের অভ্যন্তরীণ বিষয় হলেও, তার মারাত্মক প্রভাব পড়ছে বাংলাদেশের ওপর। জীবন বাঁচাতে হাজার হাজার রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আশ্রয় নিচ্ছে। তাদের প্রতি মানবিক আচরণ করা সকলের প্রাথমিক কর্তব্য। কিন্তু এর ফলে বাংলাদেশের অর্থনীতির ওপর মারাত্মক নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে এবং পড়বে। নেতৃবৃন্দ বলেন, রোহিঙ্গা সমস্যাকে মূলধন করে কতিপয় সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠী ও দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্রকারী শক্তি তাদের অশুভ অভিসন্ধি কার্যকর করতে সচেষ্ট রয়েছে। তাদের অশুভ তৎপরতা পরিস্থিতিকে আরো ভয়াবহ করার আশঙ্কা বাড়িয়ে তুলছে। এমন অবস্থা সৃষ্টি হওয়ার জন্য মায়ানমারের সরকার ও সেদেশের সেনাবাহিনীই প্রধানত দায়ী। রোহিঙ্গা সমস্যার স্থায়ী সমাধান মায়ানমারকেই করতে হবে বলেও মনে করেন তিনি। নেতৃবৃন্দ বলেন, তারা যে সেদেশের নাগরিক-এ সত্যকে স্বীকার করে নিয়ে মায়ানমারকে প্রসঙ্গে জাতিসংঘের উদ্যোগে কফি আনানের নেতৃত্বে গঠিত কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী এই সমস্যা সমাধানের ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। এ বিষয়ে জাতিসংঘের উদ্যোগ গ্রহণের জন্য জোর প্রচেষ্টা চালাতে হবে এবং এ বিষয়ে বিশ্বজনমত গড়ে তুলতে হবে। এ বিষয়ে জরুরি ভিত্তিতে উপযুক্ত কূটনৈতিক ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য নেতৃবৃন্দ বাংলাদেশ সরকারের প্রতি আহ্বান জানান। রোহিঙ্গাদের জীবনের নিরাপত্তা ও তাদের মানবাধিকার রক্ষার জন্য এগিয়ে আসার পাশাপাশি, যেসব দেশি-বিদেশি সাম্প্রদায়িক জঙ্গিগোষ্ঠী রোহিঙ্গা ইস্যু নিয়ে ঘৃণ্য খেলায় লিপ্ত রয়েছে, তাদের ষড়যন্ত্র সম্পর্কে সচেতন থাকার জন্যও নেতৃবৃন্দ আহ্বান জানান। সিপিআইয়ের বিবৃতি : সিপিআই -এর কেন্দ্রীয় সম্পাদকমণ্ডলী মায়ানমারের রাখাইন প্রদেশে বসবাসরত রোহিঙ্গাদের ওপর বর্বর আক্রমণ ও নির্মম নির্যাতনের নিন্দা জানিয়েছেন। এক বিবৃতিতে সিপিআই-এর নেতৃবৃন্দ বলেন, বিগত বেশ কয়েক বছর ধরে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর উপর আক্রমণ অব্যাহত থাকলেও বর্তমানে তা ‘জাতিগত নিধনযজ্ঞ’-এ রূপ নিয়েছে। এর ফলে শুধুমাত্র হাজার হাজার মানুষ নিহতই হচ্ছে না, সাথে সাথে লক্ষ লক্ষ মানুষ বর্ডার পাড়ি দিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিতে বাধ্য হচ্ছে। বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ আরো বলেন, রাখাইন প্রদেশে বিপুল পরিমাণ তেল ও প্রাকৃতিক গ্যাসের রিজার্ভের উপর পশ্চিমা কর্পোরেটদের নজর এবং মায়ানমারে রোহিঙ্গাদের উচ্ছেদ একই সূত্রে গাঁথা। মিয়ানমারের সামরিক ও রাজনৈতিক নেতৃত্ব কর্পোরেটদের চাহিদা মেটানোর লক্ষ্যে রোহিঙ্গাদের উপর গণহত্যা ও নির্যাতন চালাচ্ছে। দুর্ভাগ্যজনকভাবে অং সান সুচির মানবাধিকারের উপর এত বড় আঘাতের বিষয়ে পদক্ষেপ নিতে ব্যর্থ হয়েছেন ও নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করছেন। ভারতের প্রধানমন্ত্রী মায়ানমার সফরকালে এই বিষয়ে কঠোর অবস্থানের পরিবর্তে মায়ানমার সরকারের ভাষ্যকেই সমর্থন করেছেন। মোদির এই অবস্থান তার সাম্প্রদায়িক-মতাদর্শিক অবস্থানেরই বহিপ্রকাশ। বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ জাতিসংঘের সাবেক মহাসচিব কফি আনানের নেতৃত্বাধীন কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী রোহিঙ্গা সংকটের স্থায়ী সমাধান করার দাবি জানান এবং সেই লক্ষ্যে ভারত সরকারকে এই ইস্যুতে যথাযথ কূটনৈতিক পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানান।

Print প্রিন্ট উপোযোগী ভার্সন



Login to comment..
New user? Register..