দাসপ্রথার পক্ষে ট্রাম্পের অবস্থান

Facebook Twitter Google Digg Reddit LinkedIn StumbleUpon Email

একতা বিদেশ ডেস্ক : ভার্জিনিয়ায় যুক্তরাষ্ট্রে গৃহযুদ্ধের সময় দাসপ্রথার পক্ষের কনফেডারেট বাহিনীর এক কমান্ডারের ভাস্কর্য সরানো নিয়ে গত সপ্তাহে হওয়া সংঘর্ষে দুই পক্ষকে দোষারোপ করে এবং পরে ভাস্কর্যের পক্ষে অবস্থান নিয়ে বর্ণবাদ নতুন করে উসকে দিয়েছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। ভার্জিনিয়ার শার্লটসভিলে গত ১২ আগস্ট সহিংসতার ঘটনার প্রতিক্রিয়া জানানো নিয়ে তীব্র সমালোচনার মধ্যেও আছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট। প্রতিটি মন্তব্যই নিজ দলের নেতাদের তীব্র সমালোচনা শিকার হচ্ছেন। ভার্জিনিয়ার ঘটনার প্রথম প্রতিক্রিয়ায় ডানপন্থি শ্বেতাঙ্গ জাতীয়তাবাদীদের স্পষ্ট সমালোচনা না করায় দলে তোপের মুখে পড়েছিলেন ট্রাম্প। এবার ঘটনাটি নিয়ে তার সর্বশেষ মন্তব্যেও ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন রিপাবলিকান দলের জ্যেষ্ঠ নেতারা। ঘটনার জন্য সব পক্ষের সমালোচনা করার পর একবার ১৪ আগস্ট শ্বেতাঙ্গ বর্ণবাদীদের দায়ী করে কথা বলেন ট্রাম্প। পরদিন ফের ডান ও বাম চরমপন্থি উভয় পক্ষকেই দায়ী করে আগের অবস্থান থেকে সরে আসেন। ভার্জিনিয়ার শার্লটসভিলের একটি পার্ক থেকে আমেরিকার গৃহযুদ্ধে দাসপ্রথার পক্ষে ‘কনফেডারেট’ বাহিনীকে নেতৃত্ব দেওয়া জেনারেল রবার্ট ই লি-র ভাস্কর্য অপসারণের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে কট্টর-ডানপন্থি শ্বেতাঙ্গরা বিক্ষোভ সমাবেশের ডাক দেয়। সেখানে ডানপন্থিবিরোধীরাও অবস্থান নেয়। দুই পক্ষের কয়েক ঘণ্টার সংঘর্ষের পর এক তরুণ ডানপন্থিবিরোধী প্রতিবাদকারীদের ভিড়ে গাড়ি উঠিয়ে দিলে এক নারী নিহত এবং অন্তত ১৯ জন আহত হন। এ ঘটনায় সন্দেহভাজন ওহাইও অঙ্গরাজ্যের বাসিন্দা ২০ বছর বয়সী জেমস ফিল্ডকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ; যাকে নাৎসিদের প্রতি সহানুভূতিশীল বলে ধারণা করা হচ্ছে। পরে ট্রাম্পের মন্তব্যের সমালোচনায় যুক্তরাষ্ট্র পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষের স্পিকার রিপাবলিকান নেতা পল রায়ান বলেন, ‘শ্বেতাঙ্গ শ্রেষ্ঠত্ববাদ ন্যক্কারজনক। এ নিয়ে কোনও নৈতিক অস্পষ্টতা থাকতে পারে না।’ এক টুইটে রিপাবলিকান সিনেটর জন ম্যাককেইনও ট্রাম্পের অবস্থানের সমালোচনা করেন। ডেমোক্রেট নেতারাসহ আরও অনেকেই ট্রাম্পের মন্তব্যের তীব্র নিন্দা করেছেন। ওয়াশিংটন পোস্ট ট্রাম্পের মন্তব্য নিয়ে রিপাবলিকান এবং ডেমোক্র্যাটিক দলের ৫৫ জনের প্রতিক্রিয়া নিয়েছে। দেখা গেছে, এর মধ্যে মাত্র একজন ট্রাম্পকে সমর্থন করেছেন। ট্রাম্পের অবস্থানের প্রতিবাদে তার উপদেষ্টা পরিষদ থেকে বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের সিইও পদত্যাগ করেন। বাধ্য হয়ে সেসব পরিষদ ভেঙ্গেই দেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট। এদিকে ১৭ আগস্ট এক টুইট বার্তায় ট্রাম্প ভাস্কর্যটিকে ‘চমৎকার’ অ্যাখ্যা দিয়ে এটি সরানোর সিদ্ধান্তের সমালোচনা করেছেন বলেও জানিয়েছে বিবিসি। ‘দুঃখের সঙ্গে দেখতে হচ্ছে চমৎকার সব ভাস্কর্য ও স্মৃতিচিহ্ন সরিয়ে ফেলে আমাদের মহান এ দেশের ইতিহাস ও সংস্কৃতি টুকরো টুকরো করে ফেলা হচ্ছে। আপনি ইতিহাস বদলাতে পারবেন না, কিন্তু তা থেকে শিক্ষা নিতে পারবেন,’ বলেন ট্রাম্প। একের পর এক ভাস্কর্য সরিয়ে নেওয়াকে বোকামি বলেও অভিহিত করেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট।“রবার্ট ই লি, স্টোনওয়েল জ্যাকসন, তারপর কে ওয়াশিংটন, জেফারসন? চরম বোকামি হচ্ছে।” রবার্ট ই লি’র মতো স্টোনওয়েল জ্যাকসনও কনফেডারেট বাহিনীর কমান্ডার ছিলেন। ভার্জিনিয়া থেকে তার ভাস্কর্যও সরিয়ে নেওয়ার চিন্তা করা হচ্ছে। শার্লটসভিলে সহিংসতায় কট্টর ডানপন্থিদের পাশাপাশি তাদের বিরোধীদের সমালোচনা করে তীব্র প্রতিক্রিয়ার মুখে পড়া ট্রাম্পের নতুন এই মন্তব্য আগুনে ঘি ঢেলে দেবে বলে ধারণা করছেন বিশ্লেষকরা।

Print প্রিন্ট উপোযোগী ভার্সন



Login to comment..
New user? Register..