আমাদের জন্য এই পতাকা শ্রমিকের রক্তপতাকা
ত্রয়োদশ কংগ্রেস শেষ হলো। কিন্তু দায়িত্ব বাড়লো। দেশের এই পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির হাতে যে অনেক অনেক গুরুদায়িত্ব। শুধু পার্টিকে বাড়ানো নয়, দেশকে বাঁচানো, দেশের গতিপথ ঠিক করার এই মুহূর্তে হওয়া কংগ্রেসের গুরুত্ব তাই অনেক।
আমাদের নেতাকর্মী, সমর্থকরা জানেন, কংগ্রেস কেবলই দলীয় পুনর্গঠন বা নীতিনির্ধারণের বিষয় নয়; পুনর্মিলনীও নয়, শ্রমিক শ্রেণির প্রতি আমাদের কর্তব্য, আমাদের ভালোবাসা, আমাদের সংগ্রামের ঐতিহ্য-সবই এখানে জড়িয়ে আছে। এই লাল পতাকা, যা আমরা তুলে ধরেছি, তা শুধুমাত্র কাপড় নয়; এটি শ্রমিকের রক্তে রাঙানো, প্রতিটি শ্রমজীবীর স্বপ্নের প্রতীক। ইতিহাস বলছে, শ্রমিকরা যখন একত্রিত হয়, তখন দুনিয়া বদলে যায়।
রুশ বিপ্লবের সেই দিকদর্শন প্রেরণা যুগ যুগ ধরে আমাদের অনুপ্রাণিত করে যাচ্ছে। ভবিষ্যতের বিপ্লবীদের দীক্ষা দেবে। মার্কস, লেনিন-তাদের তত্ত্ব তো শুধু তত্ত্ব নয়; এটি একটি দিশারি যা দেখায় কিভাবে শ্রমিকের হাতে শক্তি, শ্রমের মর্যাদা এবং জনগণের জন্য ন্যায় প্রতিষ্ঠা করা যায়। ১৯১৭ সালের রাশিয়ার সেই অক্টোবরে, যখন শ্রমিক-কৃষক, সাধারণত জনগণ একত্রিত হয়ে ক্ষমতার শৃঙ্খল ভেঙেছিল, আমরা দেখেছি-স্বপ্ন যখন সমন্বিত প্রচেষ্টার সঙ্গে মিশে যায়, তখন তা বাস্তবে রূপ নেয়। আজ, বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে, সেই স্বপ্নের উজ্জ্বল আলো আমরা দেখতে চাই। মুক্তিযুদ্ধের সেই অনন্য অধ্যায় আমদের শিখিয়েছে, আমরা চাইলে হয় না, এমন কিছুই নেই।
ত্রয়োদশ কংগ্রেস আমাদের ফের মনে করিয়ে দিচ্ছে, শ্রমিক শ্রেণির, কৃষকের মুক্তিই আমাদের চূড়ান্ত লক্ষ্য। তারা শুধু উৎপাদনের চালিকাশক্তি নয়; তারা এই দেশের হৃদয়, রক্ত ও প্রাণ। শ্রমিকের শক্তি, স্বপ্নে আমরা ভবিষ্যতের বাংলাদেশ ভবিষ্যৎ গড়বো। সে লক্ষ্যেই কংগ্রেসে কর্মসূচি এসেছে, দলিল, কৌশল আলোচিত হয়েছে। এগুলো কেবল কাঠামোগত চর্চা নয়; এগুলো আমাদের চেতনার প্রতিফলন।
তবে কেবল অতীতে থেমে থাকলেও আমাদের চলবে না। ভবিষ্যৎ আমাদের ডাকছে। আমরা বিশ্বাস করি, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, নিরাপত্তা এবং সমান সুযোগ শ্রমিক শ্রেণির জন্য নিশ্চিত করলে একটি সমৃদ্ধ, ন্যায়সঙ্গত সমাজ গড়ে উঠবে। রুশ বিপ্লব যেমন বিশ্বকে নতুন দিশা দেখিয়েছিল, মুক্তিযুদ্ধ যেমন বুকে অবিস্মরণীয় হয়ে আছে, তেমনই আমাদের সংগ্রামও বাংলাদেশকে নতুন দিগন্তের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাবে।
এখন সময় এসেছে এই লাল পতাকাকে আরও উঁচুতে উড়ানোর। এটি শুধু আমাদের দলের নয়; এটি দেশের শ্রমিকদের, কৃষক এবং জনগণের। এই পতাকা, শ্রমিকদের রক্তে রাঙানো, তাদের ঐক্য এবং আমাদের ভবিষ্যৎ গঠনের প্রতীক। আমরা জানি, পথ কঠিন, সংগ্রাম দীর্ঘ, কিন্তু লক্ষ্য অর্জিত হবেই।
সম্পাদকীয়
মৃত্যুঞ্জয়ী বেতিয়ারা বীর শহীদেরা
Login to comment..








প্রিন্ট উপোযোগী ভার্সন