যমুনার গ্রাসে সিরাজগঞ্জের দুই শতাধিক ঘর-বাড়ি
সিরাজগঞ্জ সংবাদদাতা :
যমুনার ভাঙনে জেলার কাজীপুর উপজেলার খাসরাজবাড়ী ও যুক্তিগাছাসহ বিভিন্ন গামের দুই শতাধিক ঘরবাড়ি বিলীন হয়ে গেছে। নদীগর্ভে চলে গেছে ফসলি জমিসহ বহু গাছপালা। অভিযোগ উঠেছে, নদীভাঙন রোধে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ প্রয়োজনীয় কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি। ফলে প্রায় দুই সপ্তাহ ধরে চলমান এ ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন কৃষকসহ বহু সাধারণ মানুষ।
মাইজবাড়ী গ্রামের ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা জানান, ভাঙনের ফলে গম ক্ষেতের অপ্রাপ্ত গাছগুলো কাটতে বাধ্য হয়েছেন। এতে তারা ব্যাপক আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন।
ঢেকুরিয়া গ্রামের হাবিবুর রহমান জানান, চার বছর আগে তিনি মল্লিকপাড়া ও যুক্তিগাছা চরে আশ্রয় নেন। কিন্তু এরই মধ্যে এ নিয়ে পাঁচবার নদীভাঙনের কবলে পড়েছেন তিনি। একসময় পৈতৃক বসতবাড়ি ও ফসলি জমি থাকলেও এখন তিনি নিঃস্ব। প্রতি বছরের এ অব্যাহত ভাঙনে নিঃস্ব হয়েছেন তার মতো বহু মানুষ।
উপজেলার খাসরাজবাড়ী ইউপি চেয়ারম্যান গোলাম রব্বানী জানান, শুকনা মৌসুমে প্রতি বছরই কমবেশি নদীভাঙন হলেও এবার ভাঙনের তীব্রতা বেশি। যমুনার মাঝখানে বিশাল চর জেগে ওঠায় ভাঙনের তীব্রতা ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে।
আর প্রতি বছরই এ ভাঙন দেখা দিলেও তা প্রতিরোধে আগে থেকে কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয় না। তিনি অভিযোগ করে বলেন, এসব অঞ্চলের দুর্গতদের জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ড ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের তেমন কোনো উদ্যোগ নেই। কর্তৃপক্ষ যেন ধরেই নিয়েছে, বর্ষা মৌসুম ছাড়া অন্য সময় নদী ভাঙে না।
নতুন মাইজবাড়ী গ্রামের হবিবার রহমান জানান, এলাকার বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ভেঙে যাওয়ার পর স্থানীয় পানি উন্নয়ন বোর্ড হয়তো আবারো নতুন করে রিং তৈরি করবে। এজন্য কোটি টাকা বরাদ্দও দেয়া হবে। কিন্তু এরই মধ্যে কৃষকরা ভাঙনের কবলে নিঃস্ব হয়ে যাবেন। তিনি আরো জানান, বাঁধে আশ্রিত এমন অনেক পরিবার রয়েছে, যাদের একসময় প্রচুর জমি ছিল। অথচ এখন তারা অন্যের জমিতে মজুরি খেটে কোনোমতে বেঁচে আছেন।
এলাকাবাসী জানান, নদীভাঙন রোধে ব্রহ্মপুত্র বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের সংস্কারকাজে শতকোটি টাকা খরচ করা হলেও যমুনা নদীর পশ্চিম দিকের নদীভাঙন বন্ধ করা সম্ভব হয়নি। প্রতি বছরই বাঁধ নির্মাণের নামে কোটি কোটি টাকা খরচ করা হচ্ছে। কিন্তু পরিকল্পিতভাবে বাঁধ নির্মাণ না করায় যমুনার পশ্চিমপাড়ের জনপদ বিলীন হয়ে যাচ্ছে।
তারা আরো অভিযোগ করে বলেন, ভাঙনরোধের নামে এক শ্রেণির ঠিকাদার আর পানি উন্নয়ন বোর্ডের কিছু অসাধু কর্মকর্তা অনেক টাকার মালিক হচ্ছে। কিন্তু ভাঙনকবলিত নিঃস্ব মানুষগুলোর দুর্ভোগ বাড়ছেই।
এ বিষয়ে কথা হলে স্থানীয় পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী সৈয়দ হাসান ইমাম এসব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘সময়মতো বরাদ্দ না পাওয়ায় কাজ করা কঠিন। এছাড়া যমুনা নদীর গতি-প্রকৃতিও বোঝা যায় না। বর্ষা ও শুষ্ক দুই মৌসুমেই যমুনার কোনো না কোনো অংশ ভাঙছে। নদীভাঙন রক্ষায় সিরাজগঞ্জ সদর থেকে কাজীপুর পর্যন্ত ১৬টি প্যাকেজ প্রস্তাবনা সংশ্লিষ্ট দপ্তরে পাঠানো হয়েছে। এরই মধ্যে সাতটি প্যাকেজের কাজ শেষ পর্যায়ে। অর্থ বরাদ্দ হলে বাকি নয়টি প্যাকেজের কাজও শুরু হবে।’ তখন ভাঙন প্রতিরোধ সম্ভব হবে বলে জানান তিনি।
শেষের পাতা
রাষ্ট্রীয় খাতেই আধুনিকায়ন করে পাটকল চালু করতে হবে
লুটেরাদের বিকল্প ক্ষমতা কেন্দ্র গড়ে তোলার আহ্বান
ছাত্র রাজনীতি বন্ধ সমাধান নয় বলছেন শিক্ষার্থীরা
সন্ত্রাসী ছাত্র সংগঠনগুলোর কার্যক্রম নিষিদ্ধ করতে হবে
‘বাড়তি টাকা নিয়ে এসেও কুলাতে পারছি না’
শিক্ষা বাণিজ্যের বিরুদ্ধে ছাত্র সমাজকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান
উপজেলা নির্বাচনে জামানত বৃদ্ধি দেশকে লুটেরাদের হাতে তুলে দেয়ার চক্রান্ত
ক্ষেতমজুর নেতা ছাইদার আলী মণ্ডলের মৃত্যুতে শোক
পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়, মেডিকেল ও ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ প্রতিষ্ঠাসহ ৮ দফা দাবি সিপিবির
খাল-বিলের পানি সেচে চলছে মাছ ধরার ধুম
সিন্ডিকেটকারীদের বিরুদ্ধে সরকার ব্যবস্থা নিচ্ছে না
৭ দিনের সংবাদ...
Login to comment..