চীন-যুক্তরাষ্ট্র সংঘাত বিপর্যয় ডেকে আনবে

Facebook Twitter Google Digg Reddit LinkedIn StumbleUpon Email
একতা বিদেশ ডেস্ক : ডোনাল্ড ট্রাম্পের আমেরিকাকে এবার সরাসরি সতর্কবার্তা দিলেন চীনের প্রধানমন্ত্রী। গত ১৫ মার্চ চীনের বার্ষিক পার্লামেন্ট অধিবেশন ‘ন্যাশনাল পিপল’স কংগ্রেস’-এর শেষ দিনে গ্রেট হল অব দ্য পিপল-এ দেয়া ভাষণে চীনের প্রধানমন্ত্রী লি কেকিয়াং আমেরিকার উদ্দেশে স্পষ্ট হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেছেন, ‘কোনো বাণিজ্যিক যুদ্ধ শুরু হোক, তা আমরা চাই না।’ চীনের সঙ্গে বাণিজ্যিক যুদ্ধে জড়ালে যুক্তরাষ্ট্র খুব ভুল করবে, এমনই বার্তাই দিয়েছেন কেকিয়াং। এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহেই মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং-এর বৈঠক হওয়ার কথা। ফ্লোরিডার মার-এ-লাগো রিসোর্টে ৬-৭ এপ্রিল ট্রাম্প-জিনপিং বৈঠকে বসতে চলেছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। ট্রাম্প প্রশাসনের পক্ষ থেকে মাঝেমধ্যেই যুক্তরাষ্ট্রে চীনা পণ্যের আমদানির ওপর চড়া শুল্ক বসানোর হুমকি দেয়া হচ্ছে। চীনের ন্যাশনাল পিপল’স কংগ্রেসের শেষ দিনে এ নিয়েই মুখ খোলেন চীনা প্রধানমন্ত্রী। দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যিক সম্পর্ক নষ্ট করা নয়, আরও জোরদার করার লক্ষ্যেই আগানো উচিত যুক্তরাষ্ট্র-চীনের, এমনই বার্তা দিয়েছেন তিনি। কেকিয়াং-এর ভাষায়: ‘এই সম্পর্ক শুধু চীন আর যুক্তরাষ্ট্রের জন্যেই গুরুত্বপূর্ণ নয়, আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক শান্তি ও নিরাপত্তার জন্যও এই সম্পর্ক অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।’ চীনা প্রধানমন্ত্রীর বার্তা হল, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র চীনের বিরুদ্ধে কোনো অদৃশ্য বাণিজ্যিক অবরোধ তৈরি করতে চাইলে তার ফল ভাল হবে না। চীনের সঙ্গে সংঘাতে জড়ালে গোটা বিশ্বকে তার ফল ভুগতে হবে, প্রচ্ছন্নভাবে এমনটাই বলতে চেয়েছেন কেকিয়াং। এপ্রিলে শি জিনপিং-এর সঙ্গে ডোনাল্ড ট্রাম্পের যে বৈঠক হওয়ার কথা, সেখানে অনেকগুলো বিষয় নিয়ে আলোচনা হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। আমেরিকা ও চীনের মধ্যে বাণিজ্যিক সম্পর্কের অবনতি নিয়ে কথা তো হবেই, দক্ষিণ চীন সাগর, তাইওয়ান এবং ক্রমশ উত্তপ্ত হতে থাকা কোরীয় ইস্যু নিয়েও কথা হবে বলে মনে করা হচ্ছে। তাই চীনা প্রধানমন্ত্রী তার ভাষণে চীন-মার্কিন সম্পর্কের ভবিষ্যৎ নিয়ে বেশ কিছু ইতিবাচক কথাও বলেছেন। চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের ভবিষ্যৎ নিয়ে তিনি অত্যন্ত আশাবাদী এবং এই সম্পর্ক আরো ‘উজ্জ্বল’ হবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি। ট্রাম্প ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকেই চীন-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্কে উত্তেজনা চলছে। দায়িত্ব নেয়ার পরপরই ট্রাম্প তাইওয়ানের প্রেসিডেন্টের সাথে ফোনে কথা বলেন। যা দীর্ঘদিন ধরে এক চীন নীতি মানা যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র নীতির সাথে সাংঘর্ষিক বলে মন্তব্য করে আসছিলো চীনা রাজনৈতিক নেতৃত্ব। এর প্রেক্ষিতে তাইওয়ান সীমান্তে যুদ্ধজাহাজ মোতায়েন করেছিলো চীন। আবার দক্ষিণ চীন সাগরে কৃত্রিম দ্বীপ বানানো নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় হয়। যুক্তরাষ্ট্রের ভাষ্যমতে দক্ষিণ চীন সাগরে চীনের সামরিক অবস্থান ও দখল এ অঞ্চলে দীর্ঘমেয়াদী সামরিক উত্তেজনার সৃষ্টি করবে। চীন এটিকে আভ্যন্তরীণ ইস্যু ঘোষণা দিয়ে এ ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্রের নাক না গলানোর ব্যাপারে সতর্ক করে আসছে। এসব বিষয় নিয়ে চীন যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্ক দিনে দিনে অবনতির দিকে যাচ্ছে। বিশ্লেষকদের ধারণা, এ অবস্থা চলতে থাকলে যেকোনো সময় যুদ্ধ বেঁধে যেতে পারে। যা সারা বিশ্বের কয়েক কোটি জনগণের জীবন ও আর্থিক ক্ষতিসাধন করবে তা বলার অপেক্ষা রাখে না।

Print প্রিন্ট উপোযোগী ভার্সন



Login to comment..
New user? Register..