প্রধান উপদেষ্টা যুক্তরাষ্ট্রের এজেন্ডা বাস্তবায়ন করছেন : বাম জোট

Facebook Twitter Google Digg Reddit LinkedIn StumbleUpon Email

ঢাকায় বাম গণতান্ত্রিক জোটের মিছিল পূর্ব সমাবেশে বক্তব্য রাখেন সিপিবি সভাপতি মোহাম্মদ শাহ আলম [ ছবি: রতন কুমার দাস ]
একতা প্রতিবেদক : মানবিক করিডরের নামে বাংলাদেশ, মিয়ানমারসহ দক্ষিণ এশিয়ায় অস্থিরতা তৈরি করে যুদ্ধ বাধানোর চক্রান্ত করছে যুক্তরাষ্ট্র। আর তা বাস্তবায়নে অন্তর্বর্তী সরকার সহযোগী ভূমিকা পালন করছে বলে অভিযোগ করেছেন বাম গণতান্ত্রিক জোটের নেতারা। তাঁরা বলছেন, বাংলাদেশের জনগণ দেশের জাতীয় স্বার্থ ও নিরাপত্তায় জড়িত এমন কোনো বিষয়ে ছাড় দেবে না। একই সঙ্গে বর্তমান সরকারের এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার এখতিয়ার নেই বলে জানিয়েছেন নেতারা। গত ১৫ মে বিকেলে রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে কথিত মানবিক করিডরের নামে বাংলাদেশকে সাম্রাজ্যবাদী যুদ্ধে জড়ানোর চক্রান্ত ও নিউমুরিং টার্মিনাল বিদেশিদের দেওয়া এবং কাতারকে সামরিক সরঞ্জাম তৈরির কারখানা প্রতিষ্ঠার অনুমতি না দেওয়ার দাবিতে বাম গণতান্ত্রিক জোট আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশ এসব কথা বলেন জোটের নেতারা। সমাবেশে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির সভাপতি মোহাম্মদ শাহ আলম বলেন, ইউনূস সরকার ক্ষমতায় আসার পর নতুন পাঁয়তারা শুরু হয়েছে। আমাদের দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা ও ইনক্লুসিভ নির্বাচনের করার

নারায়ণগঞ্জ
কথা আমেরিকার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বারবার বলেছিল। তাদের দৌড়ঝাপ দেশবাসী প্রত্যক্ষ করেছে। এ বিষয়ে এখন তাদের কোনো কথা নাই। মানবিক করিডরের নামে আমাদের কাঁধে ভর করে আমেরিকা তার ইন্দো-প্যাসেফিক ভূরাজনীতির যে ব্লুপ্রিন্ট মিয়ানমারকে ঘিরে, তা কার্যকর করতে তৎপর হয়ে উঠেছে। এখানে ইউনূস সরকার এই এজেন্ডা বাস্তবায়িত করার জন্য উঠেপড়ে লেগেছেন। রাখাইনে ভারতের বিনিয়োগ-প্রজেক্ট, চীনের ইনভেস্টমেন্ট আছে। এখানে চীন-ভারতের স্বার্থ জড়িত। মানবিক করিডর এর নামে বাংলাদেশ যদি জড়িয়ে যায় তাহলে আমাদের স্বাধীনতা-স্বাবভৌমত্ব ভয়ংকরভাবে হুমকির মধ্যে পড়বে। শাহ আলম আরও বলেন, মিয়ানমারকে পাশ কাটিয়ে যদি মানবিক করিডর বাংলাদেশের মাধ্যমে হয়, তাহলে সামরিক জান্তা বসে থাকবে? সেখানে জান্তা সরকার বোম্বিং করবে। রোহিঙ্গা, আরাকান আর্মি সবাই শেষ হয়ে যাবে। খেলা শুরু হবে ভারত, চীন, আমেরিকার। এই খেলার মধ্যে আমাদের দেশ যদি পড়ে যায়, তাহলে দেশ ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত হবে। আমাদের দেশে নতুন গাজা তৈরি হবে। বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দলের (বাসদ) সাধারণ সম্পাদক বজলুর রশীদ

রংপুর
ফিরোজ বলেন, তিনটা কনটেইনার টার্মিনালের একটা ইতিমধ্যে সৌদি আরবকে দেওয়া আছে। নিউমুরিং দেওয়ার কথা চলছে দুবাইকে। এই আরব যত কোম্পানি দেখেন, তাদের নাটাই হলো আমেরিকা। ডিপি ওয়ার্ল্ডের লেজ হিসেবে মার্কিন নৌবাহিনীর যুদ্ধজাহাজ বাংলাদেশের বন্দরে ভিড়বে। তাদের চীনকে ঘেরাও করার যে রাজনীতি, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় তাদের খবরদারি, সামরিক, রাজনীতি, অর্থনৈতিক, সাংস্কৃতিক কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠার বাসনা পূরণ করতে তারা চক্রান্ত করে যাচ্ছে। বক্তারা বলেন, ইন্টেরিম সরকারপ্রধান কাতারে গিয়ে বললেন তাদের অস্ত্র বানাতে আমাদের ইপিজেডে জায়গা দেবেন। এটা ইন্টেরিম সরকারের করার কথা নয়। নির্বাচিত সরকারকেই বাংলাদেশে বিদেশিদের স্বার্থ প্রতিষ্ঠা করতে দিইনি। রক্তাক্ত ২৪-এর গণ-অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে যে সরকার এসেছে, তারাও বাংলাদেশকে ইজারা দিতে চাচ্ছে। তাদের স্বার্থ আরও জোরদার করার উদ্যোগ নিচ্ছে। জোটের নেতারা বলেন, এসব বিষয়ে সরকারের পক্ষ থেকে কোনো স্পষ্ট বক্তব্য দেওয়া হচ্ছে না, বরং সরকারের দায়িত্বশীল তিনজন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি করিডরের বিষয়ে তিন ধরনের

ময়মনসিংহ
বক্তব্য দিয়েছেন। চট্টগ্রামের নিউমুরিং টার্মিনাল একটা লাভজনক প্রতিষ্ঠান। এই বন্দর তার ব্যবস্থাপনা করছে এবং এটা যথেষ্ট ভালো, অথচ এই প্রতিষ্ঠানকে এখন আরব আমিরাতের ডিপি ওয়ার্ল্ডকে দেওয়া হচ্ছে। প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন, বিদেশি সেরা সেরা প্রতিষ্ঠানকে ডেকে আনা হবে। আওয়ামী লীগ সরকার যখন ছিল, তখন এই বন্দর ডিপি ওয়ার্ল্ডকে ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব দেওয়ার কথা হয়েছিল। তখন শ্রমিকদের আন্দোলনের ফলে সেখান থেকে শেখ হাসিনা সরে আসতে বাধ্য হয়েছিলেন। আমরা ফ্যাসিবাদে ফিরে যাব না, অথচ ফ্যাসিবাদী সরকার যে নীতিতে পরিচালিত হতো, সেভাবেই বর্তমানে পরিচালিত হচ্ছে। সমাবেশে সভাপতির বক্তব্যে বাম জোটের সমন্বয়ক ও বিপ্লবী কমিউনিস্ট লীগের সাধারণ সম্পাদক ইকবাল কবির জাহিদ বলেন, বাংলাদেশের সমুদ্র, বাংলাদেশের বন্দর, মাটি কাউকে ইজারা দেওয়া যাবে না। উনি (প্রধান উপদেষ্টা) আমেরিকার এজেন্ডা বাস্তবায়ন করছেন। আরও অনেক চুক্তি প্রকাশ্যে গোপনে হয়ে যাবে। সেটি আমরা হতে দেব কি না, তা গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। এসবের সঙ্গে জাতীয় স্বার্থ ও নিরাপত্তার প্রশ্ন জড়িত।

Print প্রিন্ট উপোযোগী ভার্সন



Login to comment..
New user? Register..