রাষ্ট্রীয় খাতেই আধুনিকায়ন করে পাটকল চালু করতে হবে

খুলনায় রুহিন হোসেন প্রিন্স

Facebook Twitter Google Digg Reddit LinkedIn StumbleUpon Email

শ্রমিকদের বকেয়া বেতন পরিশোধসহ বন্ধ সকল পাটকল রাষ্ট্রীয়ভাবে চালুর দাবিতে খুলনার খালিশপুর এলাকায় বাম গণতান্ত্রিক জোটের মিছিল
একতা প্রতিবেদক : সরকার জনমত ও স্বাধীনতার চেতনা উপেক্ষা করে রাষ্ট্রীয় পাটকল গুলো বন্ধ করেছে। এখন লিজের নামে লুটপাটের আয়োজন সম্পন্ন করেছে। অতীতে বেসরকারি করনের নামে যেসব কার্যক্রম সম্পন্ন হয়েছে তার অভিজ্ঞতা এটাই বলে। আধুনিকায়ন করে রাষ্ট্রীয় খাতে পাটকল চালু না করে সরকার ব্যক্তি মালিকদের সুবিধা দেওয়ার জন্যই এই লিজ কার্যক্রম শুরু করেছে। পাটকল বন্ধ করলেও বিজিএমসি ও তাদের কর্মকর্তাদের বহর রেখে প্রতিমাসে কয়েক কোটি টাকার অপচয় করা হচ্ছে। অথচ এখনও শ্রমিকদের সমুদয় বকেয়া শতকোটি টাকা পরিশোধ করা হয়নি। বন্ধ পাটকলগুলোতে সুরক্ষা নাই। মেশিনারিসহ বিভিন্ন সরঞ্জাম লুটপাট হচ্ছে। অনেক জায়গায় জায়গা-জমিও লাপাত্তা হচ্ছে। এখন পুরো জমি লুটপাটের আয়োজন করারই অপেক্ষায় আছে। গত ৩১ মার্চ বিকাল সাড়ে চারটায় বাম গণতান্ত্রিক জোটের উদ্যোগে খুলনার খালিশপুর এলাকায় পদযাত্রা শেষে অনুষ্ঠিত সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সাধারণ সম্পাদক ও বাম গণতান্ত্রিক জোটের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক রুহিন হোসেন প্রিন্স এসব কথা বলেন। সিপিবির খুলনা জেলা সভাপতি ও বাম জোটের জেলার সমন্বয়ক ডা. মনোজ দাসের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন, সিপিবির কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক ও বাম গণতান্ত্রিক জোটের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক রুহিন হোসেন প্রিন্স, সিপিবির খুলনা জেলার সাধারণ সম্পাদক এস এ রশিদ, বিপ্লবী কমিউনিস্ট লীগের মোজাম্মেল হক খান, বাসদের কনা আক্তার, শ্রমিকনেতা নূরুল ইসলাম, আলমগীর কবির, আলমগীর হোসেন প্রমুখ। এসময় দৌলতপুর জুট মিল থাকে খালিশপুর জুট মিল ও খালিশপুর এলাকায় পদযাত্রায় বাম জোটের নেতাকর্মীরা ও স্থানীয় শ্রমিক কর্মচারীবৃন্দ যোগ দেন। রুহিন হোসেন প্রিন্স আরও বলেন, সরকার কথায় কথায় মুক্তিযুদ্ধের কথা বলে তার চেতনার কথা বলে। কিন্তু সংবিধানের ১৩ নম্বর অনুচ্ছেদে দেশের অর্থনৈতিক নীতিমালা অনুযায়ী যে অর্থনৈতিক ব্যবস্থা পরিচালনার কথা তার উল্টো পথে অর্থনীতিকে চালিত করা হচ্ছে। তাইতো এখন পাকিস্তান আমলের ২২ পরিবারের বিপরীতে নতুন ২২ পরিবারের উদ্ভব হয়েছে। এরা দেশের সম্পদ লুটপাট করে বিদেশে সেকেন্ড হোম ও বেগম পাড়া গড়ে তুলেছে। আর প্রতিনিয়ত এ ধরনের লুটেরা কোটিপতি পরিবারের উদ্ভব হচ্ছে সরকারের নীতির কারণে। এরা কেন্দ্র থেকে শুরু করে স্থানীয় লুটপাটকারীদের সহযোগিতায় রাষ্ট্রীয় সম্পদ লুটপাট করেই চলেছে। রাষ্ট্রীয় পাটকল চালাতে ব্যর্থতার দায় সরকারকে নিতে হবে। যারা এই কয়েকটি পাটকল ঠিকমতো চালাতে পারেনা তাদের ক্ষমতায় থাকারও কোনো অধিকার নেই। এদের বিরুদ্ধে দেশবাসীকে রুখে দাঁড়িয়েই মুক্তিযুদ্ধের চেতনার ধারায় বাংলাদেশকে অগ্রসর করতে হবে। একমাত্র কমিউনিস্ট এবং বামপন্থিরাই এই কাজটি করতে পারবে। বক্তারা বলেন, মুক্তিযুদ্ধের পর এ পর্যন্ত যারা ক্ষমতায় ছিল এবং আছে, তারা দেশের স্বার্থ রক্ষা করেনি তাদের স্বার্থ রক্ষা করেছে। বিএনপি জামাতের আমলে আদমজী পাটকল বন্ধ করা হয়েছে। আর বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে অবশিষ্ট পাটকল গুলোকে বন্ধ করা হয়েছে। আজ সারা দুনিয়ায় পাটের চাহিদা অনেক বেড়ে গেছে। পাট আমাদের ঐতিহ্য। একসময় আমাদের পরিচয় এরও অন্যতম বাহন ছিল। এর সাথে গ্রামীণ কৃষিসহ পুরো শিল্প ব্যবস্থা জড়িত। এই শিল্পের উন্নয়নের মধ্য দিয়ে আমরা আমাদের স্বনির্ভর অর্থনৈতিক ব্যবস্থা ও নতুনভাবে রচনা করতে পারতাম। নেতৃবৃন্দ অবিলম্বে ঈদের আগে পাটকল শ্রমিকদের সমুদয় বকেয়া পরিশোধ ও সারাদেশে রেশন ব্যবস্থা এবং ন্যায্যমূল্যের দোকান চালুর দাবি জানান।

Print প্রিন্ট উপোযোগী ভার্সন



Login to comment..
New user? Register..