তুরস্কের সঙ্গে আলোচনায় অনিচ্ছুক সিরিয়া

মিশরের সঙ্গে তুরস্কের দ্বিতীয় দফা বৈঠক

Facebook Twitter Google Digg Reddit LinkedIn StumbleUpon Email

একতা বিদেশ ডেস্ক : তুরস্কের সঙ্গে কোনো ধরনের আলোচনার সম্ভাবনা নাকচ করেছে সিরিয়া। সিরিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে দেশটির রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা ‘সানা’ জানিয়েছে, খুব শিগগিরই ইরাকের রাজধানী বাগদাদে দুই দেশের গোয়েন্দা প্রধানের মধ্যে বৈঠক হতে যাচ্ছে বলে যে খবর বেরিয়েছে তা ভিত্তিহীন। তুরস্কের সঙ্গে এ ধরণের কোনো বৈঠকের সম্ভাবনা নেই। সিরিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তাকে উদ্ধৃত করে ‘সানা’ আরও জানিয়েছে, সিরিয়া তুরস্কের সরকারকে সন্ত্রাসবাদের পৃষ্ঠপোষক বলে মনে করে। তুরস্কের কারণেই এই অঞ্চল ও বিশ্বের শান্তি ও স্থিতিশীলতা হুমকির মুখে পড়েছে বলে ঐ কর্মকর্তা মন্তব্য করেছেন। তার মতে, তুরস্ক সন্ত্রাসবাদ মোকাবেলা বিষয়ক আন্তর্জাতিক ইশতেহারগুলো অমান্য করছে। কাজেই সন্ত্রাসবাদ দমন নিয়ে তাদের সঙ্গে আলোচনা করে লাভ নেই। সম্প্রতি দৈনিক ‘তুর্কিয়ে গেজেটেসি’ এক প্রতিবেদনে দাবি করেছে, শিগগিরই বাগদাদে বসতে যাচ্ছেন তুরস্কের জাতীয় নিরাপত্তা ও গোয়েন্দা প্রধান হাকান ফিদান এবং সিরিয়ার গোয়েন্দা প্রধান আলী মামলুক। সিরিয়ায় সহিসংতা ছড়িয়ে দেওয়ার পেছনে তুরস্কেরও ভূমিকা রয়েছে বলে দামেস্ক দাবি করে আসছে। বর্তমানে এই দুই দেশের মধ্যে কোনো কূটনৈতিক সম্পর্ক নেই বরং উত্তেজনা রয়েছে। এদিকে ৭ সেপ্টেম্বর বৈঠকে বসেছিলেন তুরস্ক এবং মিশরের সরকারি কর্মকর্তারা। কয়েকটি আরব দেশের সঙ্গে প্রায় এক দশকের অনাস্থা এবং শত্রুতাপূর্ণ সম্পর্কের মধ্যে আঙ্কারা মিশরের সঙ্গে সম্পর্কোন্নয়নের পদক্ষেপ নিয়েছে। তুরস্কের রাজধানী আঙ্কারায় দ্বিতীয় দফার বৈঠকে উপ পররাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ের কর্মকর্তারা অংশ নিয়েছিলেন। গত মে মাসে মিশরের রাজধানী কায়রোয় প্রথম উচ্চপর্যায়ের কর্মকর্তাদের অংশগ্রহণে দুই দেশের মধ্যে সম্মেলন অনুষ্ঠিত হওয়ার পর আঙ্কারা ও কায়রোর মধ্যে সম্পর্ক উন্নত হওয়ার ইঙ্গিত পাওয়া যায়। ২০১৩ সাল থেকে মিশর ও তুরস্কের মধ্যকার সম্পর্ক সর্বনি¤œ পর্যায়ে গিয়ে ঠেকে। মিশরের মুসলিম ব্রাদারহুড নেতা মোহাম্মদ মুরসিকে ক্ষমতাচ্যুত করে জেনারেল আবদেল ফাত্তাহ আস-সিসি রাষ্ট্র ক্ষমতায় বসার পর তুর্কি প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়্যেব এরদোগানের নেতৃত্বাধীন সরকারের সঙ্গে কায়রোর সম্পর্কের চরম অবনতি ঘটে। ২০১১ সালে মধ্যপ্রাচ্যের আরবদেশগুলো এবং উত্তর আফ্রিকার মুসলিম দেশগুলোতে যে গণজাগরণ শুরু হয় তাতে মুসলিম ব্রাদারহুডপন্থী দলগুলোকে সমর্থন দিয়েছিল তুরস্ক। কিন্তু আরব বসন্ত বেশিরভাগ দেশে কার্যকরভাবে সফল না হওয়ায় মুসলিম ব্রাদারহুডপন্থী শক্তিগুলো বিপর্যয়ের মুখে পড়ে এবং তুরস্ক আরব বিশ্ব থেকে একঘরে হয়ে যায়। এছাড়া ২০১৮ সালে তুরস্কের ইস্তাম্বুল শহর সৌদি আরবের খ্যাতমান সাংবাদিক জামাল খাশোগি হত্যার ঘটনায় তুর্কি প্রেসিডেন্ট এরদোগান সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান এবং তার ঘনিষ্ঠ লোকজনের প্রতি আঙ্গুল তোলেন। পাশাপাশি লিবিয়ায় জাতিসংঘ সমর্থিত সরকারের প্রতি এরদোগান সমর্থন দিলেও মিশর, সৌদি আরব এবং সংযুক্ত আরব আমিরাত বিদ্রোহী নেতা খলিফা হাফতারের প্রতি সমর্থন দেয়। এ সমস্ত ঘটনায় তুরস্কের সঙ্গে আরব দেশগুলোর সম্পর্ক খুবই শীতল এবং শত্রুতাপূর্ণ অবস্থায় চলে যায়। সেখান থেকে সম্পর্ক টেনে তোলার পদক্ষেপ নিয়েছেন তুর্কি প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়্যেব এরদোগান। এর অংশ হিসেবে গত সপ্তাহে সংযুক্ত আরব আমিরাতের যুবরাজ মোহাম্মদ বিন জায়েদের সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলেন তুর্কি প্রেসিডেন্ট। এছাড়া, গত মে মাসে তিনি সৌদি রাজার সঙ্গেও আলোচনা করেন।

Print প্রিন্ট উপোযোগী ভার্সন



Login to comment..
New user? Register..