
একতা প্রতিবেদক :
ঋতুচক্রের কারণে ডিসেম্বর ও জানুয়ারি মাসে স্বাভাবিকভাবেই দেশে শীতকাল থাকে। তাই পুরোনো বছরের বিদায় এবং নতুন বছরের আগমন ঘটে থাকে শীতের মধ্য দিয়েই। তবে এবার দেশের প্রায় এক-চতুর্থাংশ জেলার ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া শৈত্যপ্রবাহের মধ্য দিয়ে ২০২০ সালের বিদায় এবং ২০২১ সালের আগমন ঘটেছে। আবহাওয়া অধিদপ্তরের পূর্বাভাসে এমনটাই জানানো হয়েছে।
আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, ১২ বা ১৩ জানুয়ারির পর থেকে দু-এক জায়গায় বিশেষ করে উত্তরাঞ্চল থেকে শৈত্যপ্রবাহ শুরু হতে পারে। ওই সময় পর্যন্ত তাপমাত্রা একটু একটু করে বাড়বে, আবার হঠাৎ কমে গিয়ে আবার শীত বেড়ে যেতে পারে। আসছে সপ্তাহের শেষ দিকে শৈত্যপ্রবাহের আভাস দিয়েছেন আবহাওয়াবিদরা। ৮ জানুয়ারি আবহাওয়াবিদ শাহীনুল ইসলাম জানান, আগামী ১২ তারিখের পর দেশের উত্তরাঞ্চল থেকে শৈত্যপ্রবাহ শুরু হতে পারে। এর আগ পর্যন্ত দেশে তাপমাত্রা কিছুটা বাড়তে পারে। তবে ১২ তারিখের একদিন আগে থেকেই তাপমাত্রা কমবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
শাহীনুল আরও জানান, চলতি মাসে দুটি শৈত্যপ্রবাহ আসতে পারে। এর মধ্যে একটি খুব তীব্র আকার ধারণ করতে পারে এবং তাপমাত্রা ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াসে নামার আশঙ্কা রয়েছে। অন্যটি মাঝারি মাত্রার শৈত্যপ্রবাহ। আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, আংশিক মেঘলা আকাশসহ সারাদেশে আবহাওয়া শুষ্ক থাকতে পারে। মধ্যরাত থেকে সকাল পর্যন্ত হালকা থেকে মাঝারি ধরনের কুয়াশা পড়তে পারে।
এদিকে দেশের উত্তর জনপদে শীতের প্রকোপ বাড়ছে। উত্তর জনপদের বিভিন্ন এলাকায় দশ দিন ধরে চলা শৈত্যপ্রবাহ এখনও অব্যাহত রয়েছে; সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ওঠানামা করেছে ৬ থেকে ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে। নতুন বছরের প্রথম দিন থেকে পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় দেশের সর্বনিম্ন ৭ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। শ্রীমঙ্গল, নওগাঁ, দিনাজপুর, তেঁতুলিয়া, ডিমলা, রাজারহাট ও চুয়াডাঙ্গা অঞ্চলে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ অব্যাহত থাকবে বলে আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে। ঘন কুয়াশার সঙ্গে হিমশীতল বাতাসের কারণে কমছে না শীতের তীব্রতা। এতে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে কর্মব্যস্ত জনজীবন। সবচেয়ে বেশি কষ্ট হচ্ছে দিনমজুর ও নিম্ন আয়ের মানুষের। কাজে যেতে না পারায় পরিবার-পরিজন নিয়ে বিপাকে পড়েছেন তারা।
আবহাওয়া অধিদপ্তর থেকে গত ডিসেম্বর মাসের আবহাওয়ার একটি পর্যালোচনায় , মাসে স্বাভাবিকের চেয়ে বৃষ্টি কম হয়েছে। সর্বনিম্ন ও সর্বোচ্চ তাপমাত্রাও স্বাভাবিকের চেয়ে কম ছিল। অর্থাৎ বেশি শীত ছিল। ডিসেম্বরে দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল কুড়িগ্রামের রাজারহাটে ৬ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আবহাওয়া অধিদপ্তরের পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, এবারের জানুয়ারি মাস স্বাভাবিকের চেয়েও শুষ্ক থাকতে পারে। অর্থাৎ এই সময়ে দেশের দু-এক জায়গায় হালকা বৃষ্টি হয়, এবার সে সম্ভাবনা নেই। তবে নদীতীরবর্তী এলাকায় হালকা থেকে মাঝারি কুয়াশা থাকতে পারে।