একতা বিদেশ ডেস্ক :
লন্ডনের আদালত উইকিলিকসের প্রতিষ্ঠাতা জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জেকে বিচারের জন্য যুক্তরাষ্ট্রে কাছে হস্তান্তরের বিষয়টি আটকে দিলেও তার জামিন নামঞ্জুর করেছে। অ্যাসাঞ্জকে আইনি লড়াই চালিয়ে যাওয়া অবস্থায় কারাগারেই থাকতে হবে। লন্ডনের ওয়েস্ট মিনস্টারের ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টের বিচারক ভ্যানেসা ব্যারাইটসার এই সিদ্ধান্ত জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, অ্যাসাঞ্জ মুক্তি পেলে পালিয়ে যাওয়ার যথেষ্ট ঝুঁকি থাকায় জামিন দেয়া হবে না। এই একই বিচারক রায় দিয়েছিলেন, অ্যাসাঞ্জকে যুক্তরাষ্ট্রের হাতে তুলে দেয়া যাবে না। এ রায় দেয়া হলে অ্যাসাঞ্জ হয়তো আত্মহত্যাও করতে পারেন বলে কারণ জানিয়েছিলেন বিচারক ভ্যানেসা ব্যারাইটসার। অ্যাসাঞ্জকে যাতে মুক্তি দেয়া না হয়, যুক্তরাষ্ট্রও
তাই চায়।
আদালতের এ সিদ্ধান্তে তেমন কোন প্রতিক্রিয়া দেখা যায়নি অ্যাসাঞ্জের মধ্যে। গ্রেপ্তার এড়াতে ২০১২ সাল থেকে লন্ডনে ইকুয়েডরের দূতাবাসে সাত বছর থাকার পর ২০১৯ সালে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়।
২০১০ সালে আফগানিস্তান, ইরাক এবং অন্য দেশে মার্কিন প্রশাসনের বিভিন্ন ধরণের কূটনৈতিক তৎপরতার নথি ও তথ্য ফাঁস করেছিলেন অ্যাসাঞ্জ। যুক্তরাষ্ট্রের প্রসিকিউটররা তার বিরুদ্ধে গুপ্তচর আইন লঙ্ঘন, সরকারি কম্পিউটার হ্যাকিং এবং তথ্য প্রকাশের অভিযোগ এনে ১৮টি মামলায় বিচারের মুখোমুখি করতে চায়।
জামিন নামঞ্জুরের রায় দেয়ার সময় বিচারক ব্যারাইটসার বলেন, অ্যাসাঞ্জকে মুক্তি দেয়া হলে যুক্তরাষ্ট্রে তাকে হস্তান্তরের আপিল প্রক্রিয়ার মুখোমুখি হতে আদালতে হাজির নাও হতে পারেন। আর এমনটা মনে করার যথেষ্ট কারণ দেখিয়ে তিনি বলেন, এই আপিলের কী সিদ্ধান্ত হবে তা এখনো নিশ্চিত নয়।
এদিকে বৃটিশ আদালতে অ্যাসাঞ্জ জামিন না পাওয়ায় হতাশা প্রকাশ করেছেন তার প্রেমিকা স্টেলা মরিস। অ্যাসাঞ্জকে ক্ষমা করতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। এ ছাড়া উইকিলিকসের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, আদালতের এমন সিদ্ধান্তের পরিপ্রেক্ষিতে আপিল করা হবে।
জুলিয়ান পল অ্যাসাঞ্জ একজন অষ্ট্রেলীয় সাংবাদিক, প্রকাশক, কম্পিউটার প্রোগ্রামার। তিনি বহুল আলোচিত উইকিলিকস এর প্রধান নির্বাহী যা মূলত গোপন নথি প্রকাশের জন্য বিখ্যাত। ১৯ জুন ২০১২ থেকে ১১ এপ্রিল ২০১৯ পর্যন্ত যুক্তরাজ্যে অবস্থিত ইকুয়েডার দূতাবাসে রিফিউজি হিসেবে রাজনৈতিক আশ্রয়ে ছিলেন। বর্তমানে লন্ডন পুলিশের হেফাজতে যুক্তরাষ্ট্রের একটি মামলার আসামী হিসেবে বেলমার্শ নামক কারাগারে বন্দী আছেন।