মহামারির বছরেও সড়কে মৃত্যু প্রায় ৫ হাজার
ঢাকা, চট্টগ্রাম, ময়মনসিংহে বেশি, পাহাড়ে কম
একতা প্রতিবেদক :
ঢাকা, চট্টগ্রাম ও ময়মনসিংহ এলাকায় সবচেয়ে বেশি সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে। পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলগুলোতে সড়ক দুর্ঘটনা কম। নিরাপদ সড়ক চাই (নিসচা)-এর প্রতিবেদনে এ তথ্য ওঠে এসেছে। গত ৬ জানুয়ারি সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবে ২০২০ সালের সড়ক দুর্ঘটনার এ তথ্য তুলে ধরেন নিসচা। ইলেক্ট্রনিক মিডিয়া, জাতীয় পত্রিকা, অনলাইন পোর্টাল, শাখা সংগঠনগুলোর রিপোর্ট এবং অপ্রকাশিত ঘটনার তথ্য থেকে এই পরিসংখ্যান তৈরি করা হয়েছে।
নিসচার চেয়ারম্যান ইলিয়াস কাঞ্চন লিখিত বক্তব্যে বলেন, ঢাকা, ময়মনসিংহ ও চট্টগ্রাম এলাকায় বেশি দুর্ঘটনা ঘটেছে। আর পার্বত্য চট্টগ্রাম (রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবান) এলাকায় কম দুর্ঘটনা ঘটে। পার্বত্য চট্টগ্রাম এলাকায় চালকরা তুলনামূলক কম গতিতে এবং যানবাহন নিয়ন্ত্রণে রেখে চালানোর কারণে দুর্ঘটনা কম হয়েছে। সড়ক আইনের সঠিক বাস্তবায়ন হলে সড়ক নিরাপদ হয়ে উঠবে বলেও মনে করেন তিনি।
সড়ক দুর্ঘটনার কারণ হিসেবে সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, সড়কের সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা ও মনিটরিংয়ের অভাব, টাস্কফোর্স কর্তৃক প্রদত্ত ১১১টি সুপারিশনামা বাস্তবায়ন না হওয়া, চালকদের মধ্যে প্রতিযোগিতা ও বেপরোয়া গাড়ি চালানোর প্রবণতা, দৈনিক চুক্তিভিত্তিক গাড়ি চালানো, লাইসেন্স ছাড়া চালক নিয়োগ, পথচারীদের মধ্যে সচেতনতার অভাব, ট্রাফিক আইন ভঙ্গ করে ওভারটেকিং করা, বিরতি ছাড়াই দীর্ঘসময় ধরে গাড়ি চালানো, ফিটনেসবিহীন গাড়ি চালানো বন্ধে আইনের প্রয়োগ না থাকা, সড়ক ও মহাসড়কে মোটরসাইকেল ও তিন চাকার গাড়ি বৃদ্ধি, মহাসড়কের নির্মাণ ত্রুটি, একই রাস্তায় বৈধ ও অবৈধ এবং দ্রুত ও শ্লথ যানবাহন চলাচল এবং রাস্তার পাশে হাটবাজার ও দোকানপাট থাকা।
সড়ক দুর্ঘটনার এসব কারণ দীর্ঘদিন ধরেই আলোচিত হয়ে আসছে। বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের সড়ক দুর্ঘটনা গবেষণা ইনস্টিটিউটের (এআরআই) গবেষণা অনুযায়ী, দেশে ৫৩ শতাংশ দুর্ঘটনা ঘটে যানবাহনের অতিরিক্ত গতির কারণে। আর ৩৭ শতাংশ দুর্ঘটনা ঘটে চালকের বেপরোয়া মনোভাবের কারণে। বিশেষজ্ঞরা সড়ক দুর্ঘটনার জন্য তিনটি কারণকে দায়ী করেছেন ওভারস্পিড, ওভারটেকিং এবং যানবাহন ও রাস্তার ত্রুটি। চালকের বেপোরোয়া চালনা এবং উচ্চগতিকে নিয়ন্ত্রণ করলে যে সড়ক দুর্ঘটনা অনেকাংশে হ্রাস পায় তার বড় প্রমাণ নিরাপদ সড়ক দুর্ঘটনার এই তথ্য। যেখানে দেখা যাচ্ছে পার্বত্য চট্টগ্রামে দুর্ঘটনা কম ঘটছে। এই অঞ্চলে চালকরা তুলনামূলক কম গতিতে নিয়ন্ত্রণে রেখে যানবাহন চালানোর কারণে দুর্ঘটনা কম হয়।
জাতিসংঘের সদস্য দেশগুলোর মধ্যে অনেকে অঙ্গীকার করেছিল, তারা ২০১১ থেকে ২০২০ সালের মধ্যে সড়ক দুর্ঘটনা অর্ধেকে নামিয়ে আনতে কাজ করবে। সেই দেশের তালিকায় বাংলাদেশও রয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় দেশে গঠন করা হয়েছে ‘ন্যাশনাল রোড সেফটি স্ট্র্যাটেজিক অ্যাকশন‘। কিন্তু তারপরও ড্রাইভিং লাইসেন্স প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা প্রতিষ্ঠিত হয়নি। ৩২ লাখ রেজিস্ট্রেশনপ্রাপ্ত গাড়ির বিপরীতে অবৈধ চালকের সংখ্যা প্রায় অর্ধেক। দেশের বিভিন্ন সড়কে ২৬০টির বেশি ঝুঁকিপূর্ণ বাঁক আজও সরলীকরণ হয়নি। এআরআইর এক গবেষণায় বলা হচ্ছে, দেশে সড়ক দুর্ঘটনার ৪৩ শতাংশই ঘটছে জাতীয় ও আঞ্চলিক মহাসড়কগুলোতে। এজন্য কাঠামোগত ত্রুটি দূর করার পাশাপাশি মহাসড়কে গতি নিয়ন্ত্রণ খুবই জরুরি।
এদিকে নিরাপদ সড়ক চাই-এর তথ্যে বলা হয়, করোনাভাইরাসের বছরেও মোট চার হাজার ৯২টি সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে। এসব সড়ক দুর্ঘটনায় চার হাজার ৯৬৯ জন নিহত হয়েছে। আহত হয়েছে পাঁচ হাজার ৮৫ জন। ২০২০ সালে রেলপথের দুর্ঘটনায় ১২৯ জন নিহত ও ৩১ জন আহত হয় আর নৌপথের দুর্ঘটনায় ২১২ জন নিহত ও ১০০ জন আহত বা নিখোঁজ হয়।
নিসচার প্রকাশিত তথ্যে বলা হয়, গত বছরের জানুয়ারি মাসে বেশি ৪৪৭টি দুর্ঘটনা ঘটে। এতে ৪৯৫ জন নিহত ও ৮২৩ জন আহত হন। আর এপ্রিল ও মে মাসে সবচেয়ে কম যথাক্রমে ১৩২ ও ১৯৬টি দুর্ঘটনা ঘটে। এর পেছনের কারণ হিসেবে বলা হয়, করোনাভাইরাস সংক্রমণ রোধে দেশে লকডাউন থাকায় দুর্ঘটনা কম হয়েছে।
প্রথম পাতা
অভিবাসন খাতে দুষ্টচক্রের থাবা
ঈদের আগে শ্রমিকদের বেতন বোনাসসহ পর্যাপ্ত ছুটি দিতে হবে
প্রায় ৫৬ শতাংশের বেশি কোম্পানি কর দেন না
সাম্রাজ্যবাদী শক্তিকে রুখে দিয়ে ফিলিস্তিনিদের মুক্তির লড়াইকে এগিয়ে নিতে হবে
মালয়েশিয়ায় যারা সেকেন্ড হোম করে আছেন তারা বৈধভাবে অর্থ নেননি : বাংলাদেশ ব্যাংক
বর্ষবরণে ১৩ নির্দেশনা ও সময় বেঁধে দিল সরকার
ঈদযাত্রায় ভোগান্তির শেষ নেই ঘরমুখো মানুষের
বেতন-ভাতা ও বোনাসের দাবিতে জি-স্কপের সমাবেশ
মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত চেতনা চর্চার মধ্য দিয়ে গোলাম আরিফ টিপুকে স্মরণ করা হবে
নোটিশ
Login to comment..