বাম গণতান্ত্রিক জোট নির্বাচন কমিশনের কার্যালয় ঘেরাও করতে গেলে পুলিশি বাধার মুখে পড়েএকতা প্রতিবেদক :
২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর ভোট ডাকাতির নির্বাচনের আয়োজক নির্বাচন কমিশনের পদত্যাগের দাবিতে হওয়া বিক্ষোভ সমাবেশে বাম গণতান্ত্রিক জোট দুর্নীতিগ্রস্ত কমিশনকে বরখাস্ত করতে রাষ্ট্রপতির প্রতি আহ্বান জানিয়েছে।
গত ৬ জানুয়ারি বাম জোটের নেতাকর্মীরা আগারগাঁওয়ের নির্বাচন কমিশন কার্যালয় ঘেরাও করতে গেলে পুলিশি বাধার মুখে পড়েন। পরে পরিবেশ অধিদপ্তরের সামনে সমাবেশ করেন তারা।
সমাবেশে জোট সমন্বয়ক ও সিপিবি’র প্রেসিডিয়াম সদস্য আবদুল্লাহ ক্বাফী রতনের সভাপতিত্বে বক্তব্য এদিনের বিক্ষোভ সমাবেশে সিপিবি’র সম্পাদক আহসান হাবীব লাবলু, বাসদ নেতা খালেকুজ্জামান লিপন, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির পলিটব্যুরোর সদস্য আকবর খান, বাসদ (মার্কসবাদী)’র আকম জহিরুল ইসলাম, ইউসিএলবি’র নেতা নজরুল ইসলাম, গণসংহতি আন্দোলনের সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য বাচ্চু ভূঁইয়া, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টি’র কেন্দ্রীয় নেতা শহীদুল ইসলাম সবুজ বক্তব্য রাখেন।
তারা বলেন, ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর দিনের ভোট রাতে করা এবং সেই ভোটকে বৈধতা প্রদান করার মধ্য দিয়ে বর্তমান প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নূরুল হুদার নেতৃত্বাধীন নির্বাচন কমিশন তার সকল ধরণের বিশ্বাসযোগ্যতা ও বৈধতা হারিয়েছে। ২০১৯ সালের ১১ জানুয়ারি বাম গণতান্ত্রিক জোটের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনোত্তর গণশুনানিতে ভোট ডাকাতির নির্বাচনের আয়োজক এ নির্বাচন কমিশনের পদত্যাগ দাবি জানানো হয়েছিল। কিন্তু পদত্যাগ না করে তারা ক্ষমতাসীন সরকারের নির্দেশে পাতানো নির্বাচন আয়োজন করে চলেছে।
নেতৃবৃন্দ আরও বলেন, এ নির্বাচন কমিশন কেবল তার সাংবিধানিক দায়িত্ব পালনে ব্যর্থতার পরিচয় দেয়নি; তারা নানা রকম অনিয়ম, দুর্নীতি, অসদাচরণ ও নিয়োগ বাণিজ্যের সাথেও সম্পৃক্ত হয়ে পড়েছে যা সংবাদপত্রে প্রকাশিত হয়েছে।
নেতৃবৃন্দ বলেন, প্রধান নির্বাচন কমিশনারসহ অন্যান্য কমিশনাররা বক্তৃতা না দিয়ে বক্তা হিসেবে দুই কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছেন যা গুরুতর আর্থিক দুর্নীতি। একজন নির্বাচন কমিশনার প্রধান নির্বাচন কমিশনারের বিরুদ্ধে ৪ কোটি টাকার নিয়োগ বাণিজ্যের অভিযোগ এনেছেন। ইভিএম ক্রয় ও ব্যবহারের ক্ষেত্রে ব্যাপক দুর্নীতির তথ্য সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে।
নেতৃবৃন্দ বলেন, এই কমিশন নৈতিকভাবে স্খলিত। এরা ইতোমধ্যে অবাধ নিরপেক্ষ, সুষ্ঠ নির্বাচন পরিচালনায় ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে। এরা ক্ষমতাসীনদের হয়ে ভোট ডাকাতির নির্বাচন আয়োজন করেছে। এই নির্বাচন কমিশনের আর কোন নির্বাচন পরিচালনার বৈধ নৈতিক কর্তৃত্ব অবশিষ্ট নাই।
নেতৃবৃন্দ ভোট ডাকাতির আয়োজক ও আর্থিক দুর্নীতিগ্রস্থ এই নির্বাচন কমিশনকে অবিলম্বে পদত্যাগ করার আহ্বান জানিয়েছে। বাম নেতারা রাষ্ট্রপতিকে বলেন, নির্বাচন কমিশন যদি স্বেচ্ছায় পদত্যাগ না করে তাহলে সাংবিধানিক ক্ষমতা প্রয়োগের মাধ্যমে জুডিশিয়াল কাউন্সিল গঠন করে অবিলম্বে বর্তমান নির্বাচন কমিশনকে বরখাস্ত করুন।
কেন্দ্রীয় কর্মসূচির পাশাপাশি জেলায় একই দাবিতে জেলা নির্বাচন কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ প্রদর্শন করা হয়।