মৌলভিবাজারে ছাত্র ইউনিয়নসহ বিভিন্ন সংগঠনের সমাবেশ। একতা প্রতিবেদক :
নোয়াখালীতে নারীকে বিবস্ত্র করে নির্যাতনসহ দেশব্যাপি নারী নির্যাতন, খুন, ধর্ষণের প্রতিবাদে এবং অপরাধীদের শাস্তির দাবিতে মৌলভীবাজারে প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে প্রগতিশীল কয়েকটি সংগঠন। শহরের চৌমোহনা এলাকায় প্রগতিশীল সংগঠনসমূহের উদ্যোগে আয়োজিত সমাবেশ সভাপতিত্ব করেন উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী জেলা সংসদের সাধারণ সম্পাদক মীর ইউসুফ আলী। সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট নেতা বিশ্বজিত নন্দীর সঞ্চালনায় এসময় বক্তব্য রাখেন, সিপিবির সাধারণ সম্পাদক নিলিমেষ ঘোষ বলু, যুব ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর জয়েস, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের সভাপতি রেহনুমা রুবাইয়াত ও ছাত্র ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক পিনাক দেব।
দুদিন পর ৮ অক্টোবর মৌলভীবাজারে নারী নির্যাতন ও ধর্ষণ বিরোধী আন্দোলনে সাধারণ শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ সমাবেশে হামলা করেছে ছাত্রলীগ। ছাত্রলীগের হামলায় আন্দোলনরত ৬ শিক্ষার্থী আহত হয় দুপুরে শহরের চৌমোহনা এলাকায় সাধারণ শিক্ষার্থীর ব্যানারে বিক্ষোভ প্রদর্শন করছিল বিক্ষুদ্ধ শিক্ষার্থীরা। এসময় জেলা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা সেখানে বাধা দিলে আন্দোলনকারীরা বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে মৌলভীবাজার প্রেসক্লাব মোড়ে অবস্থান নেয়। প্রেসক্লাবের সামনে ছাত্রলীগের ২০/২৫ জন নেতা কর্মী তাদের উপর হামলা করে। ছাত্রলীগের হামলায় আহত হয়েছে মৌলভীবাজার সরকারি কলেজের শিক্ষার্থী রাজিব সূত্রধর, আব্দুর রাইয়ান শিপু, শিহাব আহমেদসহ ছয় শিক্ষার্থী। এসময় পুলিশ নিরব দর্শকের ভূমিকায় ছিলো বলে অভিযোগ করেন আন্দোলনকারীরা।
দেশব্যাপী ধর্ষণ ও নিপীড়নের বিরুদ্ধে সড়ক অবরোধ করেছে ঠাকুরগাঁও জেলা ছাত্র ইউনিয়ন। ৭ অক্টোবর শহরের চৌরাস্তায় এসব স্লোগান দিয়ে বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ পালন করে ঠাকুরগাঁয়ের বিভিন্ন স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা। বিক্ষোভ মিছিলটি শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে শহর চৌরাস্তায় অবস্থান নেয় এবং সেখানে এ প্রতিবাদ সমাবেশটি অনুষ্ঠিত হয়।
“ধর্ষণ ও বিচারহীনতা বিরোধী ছাত্র ঐক্য” এর ব্যানারে লাঠি মিছিল ও অবস্থান কর্মসূচি এবং বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয় নারায়ণগঞ্জ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে। টানা তিন ধরে চলে অবস্থান কর্মসূচি। কর্মসূচি থেকে দলীয় মদদে কোন ধর্ষণকে বা কোন অপরাধীকে আশ্রয় দেয়া হলে কঠিন প্রতিরোধ করা হবে বলে হুঁশিয়ারী উচ্চারণ করা হয়।
রংপুর শহরে দেশব্যাপী সংঘটিত ধর্ষণ ও নিপীড়নের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ মিছিল ও বিক্ষোভ সমাবেশ করে বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন রংপুর মহানগর। ধর্ষণের বিরুদ্ধে ময়মনসিংহে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
৭ অক্টোবর ময়মনসিংহ নগরীর শহীদ ফিরোজ-জাহাঙ্গীর চত্ত্বরে বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন, যুব ইউনিয়ন, উদীচী শিল্পী গোষ্ঠী ও মহিলা পরিষদের উদ্যোগে সারাদেশে অব্যাহত ধর্ষণ -নিপীড়নের বিচার ও ব্যর্থ স্বরাষ্টমন্ত্রীর অপসারণের দাবিতে প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
সারাদেশে সংগঠিত নারী নিপীড়ন-ধর্ষণের বিরুদ্ধে চট্টগ্রামে বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন ও যুব ইউনিয়নের মশাল মিছিল অনুষ্ঠিত হয়। ৮ অক্টোবর বিকেলে নগরীর ওয়াসা ‘ধর্ষণের বিরুদ্ধে চট্টগ্রাম’ ব্যানারে একঘণ্টা অবস্থান নিয়ে প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করেন শিক্ষার্থীরা।
দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের মাধ্যমে দ্রুততম সময়ের মধ্যে ধর্ষণ মামলা নিষ্পত্তি ও সর্বোচ্চ শাস্তি কার্যকর, ধর্ষণের পরবর্তীতে অভিযুক্ত ও সন্দেহভাজন সকলের মেডিকেল টেস্ট ১২ ঘণ্টার মধ্যে নিশ্চিত করা, পূর্ববর্তী সকল ধর্ষণ মামলা আগামী ছয় মাসের মধ্যে নিষ্পত্তি করা, উত্ত্যক্ত ও সাইবার বুলিংয়ের ঘটনায় দ্রুত সময়ে ব্যবস্থা নেওয়া, প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে একজন কাউন্সিলর নিয়োগ দেওয়া উল্লেখযোগ্য।
ধর্ষণের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড নিশ্চিত ও মেয়েদের নিজেকে সুরক্ষিত রাখার কৌশল শিক্ষা বাধ্যতামূলক করাসহ ১৩ দফা দাবিতে প্রতিবাদী সমাবেশ করেছেন বগুড়ার সাধারণ শিক্ষার্থীরা। শহরের সাতমাথায় এই প্রতিবাদী সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। এতে জেলার সহস্রাধিক সাধারণ শিক্ষার্থী, সাংবাদিক ও বিভিন্ন ছাত্র সংগঠনের নেতৃবৃন্দ অংশ নেন। সমাবেশে বক্তারা ধর্ষণ প্রতিরোধে ১৩ দফা দাবি তুলে ধরেন। রতন শীলের সঞ্চালনায় এতে বক্তব্য রাখেন, বগুড়া প্রেসক্লাবের সহ-সভাপতি আব্দুস সালাম বাবু, বগুড়া সাংবাদিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক জে এম রউফ, সমকাল পত্রিকার বগুড়ার ব্যুরো প্রধান মোহন আখন্দ, করতোয়ার রিপোর্টার নাসিমা সুলতানা ছুটু, ডিবিসির জেলা প্রতিনিধি রাকিব জুয়েল, ছাত্র ইউনিয়নের সাদ্দাম হোসেন, সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টের ধনঞ্জয় বর্মণ রহমান প্রমুখ।