
একতা বিদেশ ডেস্ক:
কয়েক হাজার মার্কিন শ্রমিক এবং কর্মচারী গত ২০ জুন বর্ণবাদের বিরুদ্ধে ধর্মঘটে একাত্মতা প্রকাশ করে বিক্ষোভ করছেন। একই সঙ্গে অন্যান্য সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপরে ঘটা অবিচারের বিরুদ্ধেও প্রতিবাদ জানান তারা। নজিরবিহীন এ বিক্ষোভে উত্তাল ছিল ২০০'র বেশি মার্কিন শহর।
এই ধর্মঘটে প্রাতিষ্ঠানিক বর্ণবাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন ক্ষেত্রের শ্রমিক কর্মচারীরা অংশগ্রহণ করেন। মার্কিন সংবাদমাধ্যমের হিসেব অনুযায়ী সেদেশের ২০০'র বেশি শহরে ছড়িয়ে পড়ে ধর্মঘটের রেশ। ওয়াশিংটন পোস্টের রিপোর্ট অনুযায়ী সান ফ্রান্সিসকো শহরের প্রায় ২০০০ জ্যানিটর এই আন্দোলনে শামিল হন। দেশের অন্য প্রান্ত নিউ ইয়র্ক শহরের ৮৫টি হাসপাতালের প্রায় ৬০০০ নার্সও শামিল হন এই আন্দোলনে।
কেবলমাত্র বর্ণবিদ্বেষের বিরুদ্ধেই নয়, আন্দোলনকারীদের দাবি করোনা অতিমারীর সময় নিজেদের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কাজ চালিয়ে যাওয়া স্বাস্থ্যকর্মী এবং অন্যান্য আপতকালীন পরিষেবা ক্ষেত্রের কর্মীরা তাদের প্রাপ্য থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। তাই তারাও এই ব্ল্যাক লাইভ্স ম্যাটার আন্দোলনে শামিল হয়েছেন। বস্তুত এই আন্দোলনে অংশগ্রহণকারীদের সিংহভাগই করোনা মহামারীর সময় বিভিন্ন আপতকালীন ক্ষেত্র, যেমন নার্সিং, ক্লিনার, ডোরম্যান ইত্যাদি ক্ষেত্রে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কাজ চালিয়ে গিয়েছেন।
৪২ বছর বয়সি ক্লিনার জর্ডন ওয়েসের কথায় "অতিমারীর সময় আমরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কাজ করেছি বলেই অর্থনীতি সচল ছিল। আমাদের নিরলস পরিশ্রমের ফলেই নিউ ইয়র্ক শহরে সংক্রমণে লাগাম টানা সম্ভব হয়েছে। তাই সরকারের উচিত আমাদের ন্যায্য পারিশ্রমিক এবং সামাজিক সুরক্ষার ব্যবস্থা করা।"
গত ২০ মে ২০২০ মিনেসোটা শহরের মিনিয়াপোলিসে পুলিশ দ্বারা আটক অবস্থায় মারা যান আফ্রিকান আমেরিকান নাগরিক জর্জ পেরি ফ্লয়েড। একজন শ্বেতাঙ্গ পুলিশ অফিসার ডেরেক চাওভিন কর্তৃক আট মিনিট ছেচল্লিশ ধরে ঘাড়ের পিছনে হাটু গেড়ে বসে থাকার জন্য তার মৃত্যু হয়। পুলিশের সহিংসতায় মৃত্যুর প্রতিক্রিয়ায় বিক্ষোভ শুরু হয় যা সমগ্র যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে এবং আন্তর্জাতিক পরিসরে ছড়িয়ে পরে।
গ্রেফতার, মৃত্যু এবং পুলিশের কার্যাবলীর প্রতিবাদে আন্তর্জাতিক পরিসরে ব্ল্যাক লাইভস ম্যাটার্স নামক বিক্ষোভের সূত্রপাত হয়। প্রতিবাদ স্বরূপ বিভিন্ন দেশে উপনিবেশিক, বর্ণবাদী স্থাপনা ভেঙ্গে দেয়া হয়। জর্জ ফ্লয়েডের মৃত্যু থেকে ছড়িয়ে পড়া বর্ণবাদবিরোধী বিক্ষোভের এক মাস শেষ না হতেই আবার প্রাতিষ্ঠানিক বর্ণবাদের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ল যুক্ত্ররাষ্ট্রে।